ঢাকা ০৭:৫৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪, ৬ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গঙ্গা ও তিস্তা পানি-চুক্তিতে গ্যারান্টি ও আরবিট্রেশন ক্লজ জরুরি: আইএফসি

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ১১:৪৬:০২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৯ মার্চ ২০২৪ ৪১ বার পঠিত

আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটি (আইএফসি) এক যৌথ বিবৃতিতে ঢাকা ও দিল্লিকে গঙ্গা ও তিস্তা পানি-চুক্তিতে গ্যারান্টি ও আরবিট্রেশন ক্লজ সংযুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন।

শনিবার ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে তারা বলেন, উভয় দেশের মধ্যদিয়ে প্রবাহিত ৫৪টি নদী বাঁচিয়ে রাখতে উৎস থেকে সাগর পর্যন্ত প্রবাহ বজায় রাখা জরুরি। আর এজন্য তিস্তা পানি চুক্তি খুবই জরুরি।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, প্রতিবেশী অনেক দেশের সঙ্গে স্বাক্ষরিত পানি-চুক্তিগুলিতে ভারতের গ্যারান্টি ও আরবিট্রেশন ক্লজ রয়েছে। ফলে সিন্ধু ও মহাকালী পানি চুক্তিগুলো পারস্পরিক স্বার্থ রক্ষা করতে সমর্থ হয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশের সাথে স্বাক্ষরিত গঙ্গা পানি-চুক্তি শর্তপূরণ করেনি। বন্ধৃপ্রতীম দাবিদার দুই দেশের সম্পর্কের আশানুরূপ উন্নয়ন হয়নি।

আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটি (আইএফসি) সমন্বয়ক মোস্তফা কামাল মজুমদার বলেন, বাংলাদেশের সাথে পরামর্শক্রমে ১৯৭৫ সালের ২১ এপ্রিল থেকে ৩১ মে ৪১ দিনের জন্য গঙ্গার উপর নির্মিত ফারাক্কা বাঁধটি পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়েছিল। কিন্তু তখন থেকে একতরফা পানি প্রত্যাহার চলতে থাকে এবং বাংলাদেশে দেখা দেয় পরিবেশগত বিপর্যয়। পরে ১৯৭৭ সালে পাঁচবছর মেয়াদি পানিবণ্টন চুক্তি স্বা্ক্ষরিত হয়। যেখানে শতকরা ৮০ ভাগ পানি প্রাপ্তির গ্যারান্টি ক্লজ সংযুক্ত ছিল। কিন্তু এই চুক্তির মেযাদ পূর্ণ হবার পর নবায়ন না করে গ্যারান্টি ক্লজবাদ দিয়ে ১৯৮২ সালে ৫ বছর মেয়াদি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করা হয়। যে চুক্তি ২০২৬ সালে মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। এই চুক্তির নয়ায়ন ও তিস্তা পানি চুক্তি সম্পাদনের জন্য বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. হাসান মাহমূদ তার সাম্প্রতিক দিল্লি সফরের সময় তাগিদ দিযেছেন। তাই নবায়নের সময় চুক্তির এই দূর্বলতা অবশ্যই কাটিয়ে ওঠার পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্লেষকরা। তাই এখন সবাইকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন আইএফসি বাংলাদেশের সভাপতি ও পরিবেশ বিজ্ঞানী অধ্যাপক জসিম উদ্দিন আহমাদ।

এ বিষয়ে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি ও আইএফসি সদস্য রফিকুল ইসলাম আজাদ মনে করেন, তিস্তা নদীর কোন পানি বাংলাদেশকে দেয়া হয় না। পশ্চিম বঙ্গের গজল ডোবা বাঁধ চুইয়ে বাংলাদেশে আসে। বর্ষাকালে বন্যার পুরো পানি ছেড়ে দেয়ায় প্রতিবছর বাংলাদেশের তিস্তা অববাহিকায় ভযাবহ বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। তীর ভাঙ্গনের ফলে হাজার হাজার বাড়িঘর বিলীন হয় এবং ব্যাপক ফসলহানি ঘটে। তাই এখনই ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান এই পরিবেশ বিষয়ক সাংবাদিক। তিনি আরো বলেন, ফারাক্কা সংকটের কারণে বাংলাদেশের নদীনির্ভর বিভিন্ন স্থাপনাও হুমকির মুখে পড়তে পারে।

Facebook Comments Box
ট্যাগস :

গঙ্গা ও তিস্তা পানি-চুক্তিতে গ্যারান্টি ও আরবিট্রেশন ক্লজ জরুরি: আইএফসি

আপডেট সময় : ১১:৪৬:০২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৯ মার্চ ২০২৪

আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটি (আইএফসি) এক যৌথ বিবৃতিতে ঢাকা ও দিল্লিকে গঙ্গা ও তিস্তা পানি-চুক্তিতে গ্যারান্টি ও আরবিট্রেশন ক্লজ সংযুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন।

শনিবার ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে তারা বলেন, উভয় দেশের মধ্যদিয়ে প্রবাহিত ৫৪টি নদী বাঁচিয়ে রাখতে উৎস থেকে সাগর পর্যন্ত প্রবাহ বজায় রাখা জরুরি। আর এজন্য তিস্তা পানি চুক্তি খুবই জরুরি।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, প্রতিবেশী অনেক দেশের সঙ্গে স্বাক্ষরিত পানি-চুক্তিগুলিতে ভারতের গ্যারান্টি ও আরবিট্রেশন ক্লজ রয়েছে। ফলে সিন্ধু ও মহাকালী পানি চুক্তিগুলো পারস্পরিক স্বার্থ রক্ষা করতে সমর্থ হয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশের সাথে স্বাক্ষরিত গঙ্গা পানি-চুক্তি শর্তপূরণ করেনি। বন্ধৃপ্রতীম দাবিদার দুই দেশের সম্পর্কের আশানুরূপ উন্নয়ন হয়নি।

আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটি (আইএফসি) সমন্বয়ক মোস্তফা কামাল মজুমদার বলেন, বাংলাদেশের সাথে পরামর্শক্রমে ১৯৭৫ সালের ২১ এপ্রিল থেকে ৩১ মে ৪১ দিনের জন্য গঙ্গার উপর নির্মিত ফারাক্কা বাঁধটি পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়েছিল। কিন্তু তখন থেকে একতরফা পানি প্রত্যাহার চলতে থাকে এবং বাংলাদেশে দেখা দেয় পরিবেশগত বিপর্যয়। পরে ১৯৭৭ সালে পাঁচবছর মেয়াদি পানিবণ্টন চুক্তি স্বা্ক্ষরিত হয়। যেখানে শতকরা ৮০ ভাগ পানি প্রাপ্তির গ্যারান্টি ক্লজ সংযুক্ত ছিল। কিন্তু এই চুক্তির মেযাদ পূর্ণ হবার পর নবায়ন না করে গ্যারান্টি ক্লজবাদ দিয়ে ১৯৮২ সালে ৫ বছর মেয়াদি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করা হয়। যে চুক্তি ২০২৬ সালে মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। এই চুক্তির নয়ায়ন ও তিস্তা পানি চুক্তি সম্পাদনের জন্য বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. হাসান মাহমূদ তার সাম্প্রতিক দিল্লি সফরের সময় তাগিদ দিযেছেন। তাই নবায়নের সময় চুক্তির এই দূর্বলতা অবশ্যই কাটিয়ে ওঠার পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্লেষকরা। তাই এখন সবাইকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন আইএফসি বাংলাদেশের সভাপতি ও পরিবেশ বিজ্ঞানী অধ্যাপক জসিম উদ্দিন আহমাদ।

এ বিষয়ে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি ও আইএফসি সদস্য রফিকুল ইসলাম আজাদ মনে করেন, তিস্তা নদীর কোন পানি বাংলাদেশকে দেয়া হয় না। পশ্চিম বঙ্গের গজল ডোবা বাঁধ চুইয়ে বাংলাদেশে আসে। বর্ষাকালে বন্যার পুরো পানি ছেড়ে দেয়ায় প্রতিবছর বাংলাদেশের তিস্তা অববাহিকায় ভযাবহ বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। তীর ভাঙ্গনের ফলে হাজার হাজার বাড়িঘর বিলীন হয় এবং ব্যাপক ফসলহানি ঘটে। তাই এখনই ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান এই পরিবেশ বিষয়ক সাংবাদিক। তিনি আরো বলেন, ফারাক্কা সংকটের কারণে বাংলাদেশের নদীনির্ভর বিভিন্ন স্থাপনাও হুমকির মুখে পড়তে পারে।

Facebook Comments Box