ঢাকা ০৪:১৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এলজিডির দুই কোটি টাকার সড়ক নির্মাণের ২ মাসেই ভেঙে যাচ্ছে

সিরাজুল ইসলাম আপন, ভাঙ্গুড়া(পাবনা):
  • আপডেট সময় : ০৬:০৫:১৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ৪ বার পঠিত

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সড়ক নির্মাণের এক মাসের মধ্যে একাধিক জায়গায় ভাঙে গেছে । এজিং ভেঙে হুমকির মুখে পড়েছে নির্মাণাধীন সাড়ে ৩ কিলোমিটার সড়ক। এতে নষ্ট হচ্ছে রাষ্টীয় সম্পদ। উপজেলার পার—ভাঙ্গুড়া ইউনিয়নের পাটুলীপাড়া—কাশিপুর গ্রামের সাড়ে তিন কিলোমিটার সড়ক নিম্নমানের ইট ও খোয়া দিয়ে নির্মাণ ও সড়কের পাশদিয়ে মাটি না দেওয়ার অনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর পাবনা নির্বাহী প্রকৌশলী কাজ পরিদর্শণ করলেও কাজের মান উন্নয়ন হয়নি বলে মনে করেন এলাকাবাসী।

উপজেলা এলজিইডির সূত্রে জানা যায়, ২০২২—২০২৩ অর্থ বছরে ১ কোটি ৮০ লক্ষ ৯৯ হাজার ৩২৫ টাকাব রাদ্দের ৩.৪৭ কিঃ মিঃ কাজ পান বরেন্দ্র লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক আবুল হোসেন। এই রাস্তাটিতে পুরাতন কার্পেটিং ভেঙ্গে বেড তৈরি করার পর তার উপর প্রথম ১ কিঃ মিঃ ২ ইঞ্চি নতুন খোয়া ও বাকি রাস্তায় ৩ ইঞ্চি নতুন খোয়া দিয়ে বেড করে ২৫ মিলি কার্পেটিং ও রাস্তার পাশ দিয়ে ৩ ফিট মাটি দিয়ে সড়ক নির্মাণের এ কাজ বরেন্দ্র নামের একটি প্রতিষ্ঠান বাস্তবায়ন করার কথা। কিন্তু এ কাজ করেছেন ঈশ্বরদী উপজেলার মায়া এন্টার প্রাইজ এর মালিক সৈকত নামের এক ঠিকাদার।
এলাকাবাসী জানায়, সড়কে ব্যবহার করা হয়েছে নিম্ন মানের ইট ও বরাদ্দ কৃত নতুন খোয়া না দেওয়ার কারণে সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তার বিভিন্ন স্থানে কার্পেটিং এর মাঝ খানে পানি জমে থাকে। বিভিন্ন স্থানে উচু নিচু হয়ে দেবে গেছে রাস্তা। সড়কের পাশে ৩ ফিট মাটি দেওয়ার কথা থাকলেও নাম মাত্র মাটি দিয়েছিল। রাস্তার পাশে মাটি না থাকায় একাধিক জায়গায় এজিং (রাস্তার দুই পাশের ইটের খাড়া মেম্বারদ্বয়) ধষে সড়ক ভেঙে গেছে।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সড়কের পাশে মাটি না থাকায় একাধিক যায়গায় এজিং (রাস্তার দুই পাশের ইটের খাড়া মেম্বারদ্বয়) ধসে পরেছে। অনেক জায়গায় সড়কের একপাশ বসে গিয়ে সড়ক ভেঙে গেছে। ভাঙা স্থান গুলোতে উপজেলা এল জিইডি দপ্তর থেকে জোরা তালি দিয়েছে। আবার কিছু কিছু স্থানে এজিং ধসে পড়ায় বস্তায় বালি ভরে সেই বস্তা দিয়ে এজিং এর কাজ চালাচ্ছে। সড়কের মাটি রোধ করার জন্য গাইড ওয়াল নির্মাণ করা হয়েছে সে গাইড ওয়াল ও ভেঙে গেছে।
সরকারের প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যয়ে সড়ক নির্মাণের এক মাসেই ভাঙতে শুরু করেছে। খুব দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে ৬ মাসের মধ্যেয় সড়কে যান চলাছলের অযোগ্য হয়ে পরতে পারে। তাই উর্ধ্বতম কতৃর্পক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছে এলাকাবাসী।
পাটুলীপাড়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান সরকার বলেন, সড়ক নির্মমানে এক মাস না যেতেই রাস্তা নষ্ট হয়ে গেল বিষয়টি খুব দুঃখ জনক। উপজেলা প্রকৌশলীকে ম্যানেজ করে নিম্নমানের কাজ করেছে ঠিকেদার।
পাটুলীপাড়া গ্রামের আঃ মান্নান প্রামানিক বলেন, এই সড়ক দির্ঘ দিন চলাচলের অযোগ্য হয়েছিল। নতুন সড়ক নির্মাণ করায় এলাকাবাসী খুশি ছিলাম কিন্তু কাজ শেষ হবার এক মাস না যেতেই ভেঙে যাওয়া দেখে আমরা হতবাক।

এ বিষয়ে মায়া এন্টার প্রাইজ মালিক ঠিকেদার সৈকত আলী বলেন, গাইড ওয়াল ১০ ফিট দুরে দেওয়া দরকার ছিল কিন্তু নিকটে হওয়ায় সড়কের পাশে মাটি দেওয়া সম্ভব হয়নি তাই ভেঙে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে ভাঙ্গুড়া উপজেলা প্রকৌশলী মোছাঃ আফরোজা খাতুন বলেন, অনেক জায়গায় ভেঙে গেছে সেখানে মেরামত করা হয়েছে। এক বছরের মধ্যে রাস্তা ভেঙ্গে গেলে ঠিকেদার রাস্তা মেরামত করে দিবে। না হলে জামানোত ফেরত পাবেনা।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছা: নাজমুন নাহার বলেন, রাস্তা দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Facebook Comments Box
ট্যাগস :

এলজিডির দুই কোটি টাকার সড়ক নির্মাণের ২ মাসেই ভেঙে যাচ্ছে

আপডেট সময় : ০৬:০৫:১৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সড়ক নির্মাণের এক মাসের মধ্যে একাধিক জায়গায় ভাঙে গেছে । এজিং ভেঙে হুমকির মুখে পড়েছে নির্মাণাধীন সাড়ে ৩ কিলোমিটার সড়ক। এতে নষ্ট হচ্ছে রাষ্টীয় সম্পদ। উপজেলার পার—ভাঙ্গুড়া ইউনিয়নের পাটুলীপাড়া—কাশিপুর গ্রামের সাড়ে তিন কিলোমিটার সড়ক নিম্নমানের ইট ও খোয়া দিয়ে নির্মাণ ও সড়কের পাশদিয়ে মাটি না দেওয়ার অনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর পাবনা নির্বাহী প্রকৌশলী কাজ পরিদর্শণ করলেও কাজের মান উন্নয়ন হয়নি বলে মনে করেন এলাকাবাসী।

উপজেলা এলজিইডির সূত্রে জানা যায়, ২০২২—২০২৩ অর্থ বছরে ১ কোটি ৮০ লক্ষ ৯৯ হাজার ৩২৫ টাকাব রাদ্দের ৩.৪৭ কিঃ মিঃ কাজ পান বরেন্দ্র লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক আবুল হোসেন। এই রাস্তাটিতে পুরাতন কার্পেটিং ভেঙ্গে বেড তৈরি করার পর তার উপর প্রথম ১ কিঃ মিঃ ২ ইঞ্চি নতুন খোয়া ও বাকি রাস্তায় ৩ ইঞ্চি নতুন খোয়া দিয়ে বেড করে ২৫ মিলি কার্পেটিং ও রাস্তার পাশ দিয়ে ৩ ফিট মাটি দিয়ে সড়ক নির্মাণের এ কাজ বরেন্দ্র নামের একটি প্রতিষ্ঠান বাস্তবায়ন করার কথা। কিন্তু এ কাজ করেছেন ঈশ্বরদী উপজেলার মায়া এন্টার প্রাইজ এর মালিক সৈকত নামের এক ঠিকাদার।
এলাকাবাসী জানায়, সড়কে ব্যবহার করা হয়েছে নিম্ন মানের ইট ও বরাদ্দ কৃত নতুন খোয়া না দেওয়ার কারণে সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তার বিভিন্ন স্থানে কার্পেটিং এর মাঝ খানে পানি জমে থাকে। বিভিন্ন স্থানে উচু নিচু হয়ে দেবে গেছে রাস্তা। সড়কের পাশে ৩ ফিট মাটি দেওয়ার কথা থাকলেও নাম মাত্র মাটি দিয়েছিল। রাস্তার পাশে মাটি না থাকায় একাধিক জায়গায় এজিং (রাস্তার দুই পাশের ইটের খাড়া মেম্বারদ্বয়) ধষে সড়ক ভেঙে গেছে।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সড়কের পাশে মাটি না থাকায় একাধিক যায়গায় এজিং (রাস্তার দুই পাশের ইটের খাড়া মেম্বারদ্বয়) ধসে পরেছে। অনেক জায়গায় সড়কের একপাশ বসে গিয়ে সড়ক ভেঙে গেছে। ভাঙা স্থান গুলোতে উপজেলা এল জিইডি দপ্তর থেকে জোরা তালি দিয়েছে। আবার কিছু কিছু স্থানে এজিং ধসে পড়ায় বস্তায় বালি ভরে সেই বস্তা দিয়ে এজিং এর কাজ চালাচ্ছে। সড়কের মাটি রোধ করার জন্য গাইড ওয়াল নির্মাণ করা হয়েছে সে গাইড ওয়াল ও ভেঙে গেছে।
সরকারের প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যয়ে সড়ক নির্মাণের এক মাসেই ভাঙতে শুরু করেছে। খুব দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে ৬ মাসের মধ্যেয় সড়কে যান চলাছলের অযোগ্য হয়ে পরতে পারে। তাই উর্ধ্বতম কতৃর্পক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছে এলাকাবাসী।
পাটুলীপাড়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান সরকার বলেন, সড়ক নির্মমানে এক মাস না যেতেই রাস্তা নষ্ট হয়ে গেল বিষয়টি খুব দুঃখ জনক। উপজেলা প্রকৌশলীকে ম্যানেজ করে নিম্নমানের কাজ করেছে ঠিকেদার।
পাটুলীপাড়া গ্রামের আঃ মান্নান প্রামানিক বলেন, এই সড়ক দির্ঘ দিন চলাচলের অযোগ্য হয়েছিল। নতুন সড়ক নির্মাণ করায় এলাকাবাসী খুশি ছিলাম কিন্তু কাজ শেষ হবার এক মাস না যেতেই ভেঙে যাওয়া দেখে আমরা হতবাক।

এ বিষয়ে মায়া এন্টার প্রাইজ মালিক ঠিকেদার সৈকত আলী বলেন, গাইড ওয়াল ১০ ফিট দুরে দেওয়া দরকার ছিল কিন্তু নিকটে হওয়ায় সড়কের পাশে মাটি দেওয়া সম্ভব হয়নি তাই ভেঙে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে ভাঙ্গুড়া উপজেলা প্রকৌশলী মোছাঃ আফরোজা খাতুন বলেন, অনেক জায়গায় ভেঙে গেছে সেখানে মেরামত করা হয়েছে। এক বছরের মধ্যে রাস্তা ভেঙ্গে গেলে ঠিকেদার রাস্তা মেরামত করে দিবে। না হলে জামানোত ফেরত পাবেনা।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছা: নাজমুন নাহার বলেন, রাস্তা দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Facebook Comments Box