১৯৯১ থেকে এখন পর্যন্ত ৩৩ বছরে (২০০৭-৮ এই দু'বছর ছাড়া) ৩১ বছরই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন দুজন নারী, শেখ হাসিনা ও বেগম খালেদা জিয়া। অথচ বাংলাদেশের রাজনীতিতে জাতীয় পর্যায়ে নেতৃত্ব দেয়া নারীদের সংখ্যা এখনো হাতেগোনা।
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীদেরমধ্যে নারী প্রার্থীদের সংখ্যার দিকে তাকালেই বিষয়টি স্পষ্ট হয়। এ নির্বাচনে প্রার্থীদের মধ্যে নারী প্রার্থী পাঁচ শতাংশেরও কম!
আগামী ৭ জানুয়ারীর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে, নির্বাচন কমিশনের তৈরি প্রার্থী তালিকা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, তিনশ আসনের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা বৈধ মোট ১৮৯১ জন প্রার্থীর মধ্যে নারী প্রার্থী ৯২ জন। শতাংশের হিসেবে যা ৪.৮৬ শতাংশ।
আর সর্বশেষ ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনে ১৮৪৮ জন প্রার্থীর মধ্যে নারী ছিল ৬৮ জন। শতাংশের হিসেবে সেই নির্বাচনে নারী প্রার্থী ছিল ৩.৬৭ শতাংশ।
পেশীশক্তি ও অর্থবলে পিছিয়ে থাকা, ধর্মীয়-সামাজিক নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ও সর্বোপরি পুরুষতান্ত্রিক সমাজ, নারীদের রাজনীতিতে এগিয়ে যাওয়ার পথে প্রধান বাধা বলে মনে করছেন নারী নেতৃত্ব ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
রাজনীতিবিদ ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজনীতিতে নারীদের অংশগ্রহণ ধীর গতিতে হলেও বাড়ছে। কিন্তু উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, মূলত পারিবারিক সূত্রেই রাজনীতিতে নারীরা আসছেন। অর্থাৎ, যেসব নারীরা রাজনীতি করছেন, তাদের কারও বাবা-মা, কারও স্বামী রাজনীতিবিদ ছিলেন কিংবা আছেন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের অধীনে নিবন্ধিত ৪৪ রাজনৈতিক দলের মধ্যে অংশ নিচ্ছে ২৭ টি দল। নির্বাচনে লড়াই করা মোট ৯২ জন নারী প্রার্থীর মধ্যে ১৪টি দলের ৬৮ নারী প্রার্থী রয়েছেন। আর ২৬ জন নারী লড়ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে।
সেই হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়া ২৭ টি দলের মধ্যে ১৪ টি দল নারী প্রার্থী দিয়েছে। অর্থাৎ প্রায় ৫০ শতাংশ দলের নারী প্রার্থী নেই। আর ৩০০ আসনের হিসেবে ১৮৭ টি আসনে নারী প্রার্থী নেই।
আর দলগত হিসাবে দেখা যায়, আওয়ামী লীগের ৩৬৩ প্রার্থীর ৭ দশমিক ৬০ শতাংশ নারী প্রার্থী। জাতীয় পার্টির ২৬৪ প্রার্থীর ৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ নারী প্রার্থী। স্বতন্ত্র ৩৮২ প্রার্থীর ৬ দশমিক ৫২ শতাংশ নারী প্রার্থী।
নির্বাচন বিষয়ক গবেষক নেসার আমিনের লেখা ‘বাংলাদেশের নির্বাচনী ব্যবস্থা ও ফলাফল’ বইয়ের তথ্য মতে, বাংলাদেশের ১৯৯১ সালের সংসদ নির্বাচনের হিসাব অনুযায়ী ৩৯ জন নারী প্রার্থীর মধ্যে ৫ জন, ১৯৯৬ সালের জুন মাসের নির্বাচনে ৩৬ নারী প্রার্থীর মধ্যে ৮ জন, ২০০১ সালের নির্বাচনে ৩৮ জন নারী প্রার্থীর মধ্যে ৬ জন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে ৫৯ জন নারী প্রার্থীর মধ্যে ১৯ জন, ২০১৪ সালের নির্বাচনে ২৯ জন নারী প্রার্থীর মধ্যে ১৮ জন নারী সরাসরি নির্বাচিত হয়েছিলেন সংসদ সদস্য হিসেবে।
তবে, ওই সংসদে সংসদ সদস্য স্বামীর মৃত্যুর পর উপ নির্বাচনে তিনজন, স্বামীর ছেড়ে দেওয়া আসনে ১ জন এবং প্রধানমন্ত্রীর ছেড়ে দেওয়া আসনে একজন সহ মোট ৫ জন নারী নির্বাচিত হয়েছিলেন । আর সর্বশেষ ২০১৮ সালের অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে ৬৯ জন নারী প্রার্থীর মধ্যে ২২ জন সারাসরি ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন।
ঘুরেফিরে একই মুখ যে রাজনীতি ও নির্বাচন আসছে তার কিছুটা প্রমাণও মিলে রাজনৈতিক দলগুলোর নারী প্রার্থী ও স্বতন্ত্র নারীদের তালিকা বিশ্লেষন করে।
এবারের সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ২০ জন নারী প্রার্থী দিয়েছে। দলটির তালিকা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, এ ২০ জন প্রার্থীর ১৭ জনই বর্তমান একাদশ সংসদের সংসদ সদস্য।
একজন দশম সংসদের সংসদ সদস্য ছিলেন । বাকি ২ জনের মধ্যে ১ জন ২০০৮ সালের নির্বাচনেও দলীয় মননোনয় পেয়েছিলেন ।
শুধু মাত্র ময়মনসিংহ-৩ নিলুফার আনজুম আগে কখনও মনোনয়ন পাননি এবং সংরক্ষিত সংসদ সদস্য ছিলেন না। তার স্বামী মাহবুবুল হক শাকিল ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী ।
একইভাবে জাতীয় পার্টির ৯ জন নারী প্রার্থী মধ্যে ৩ জন সংরক্ষিত সংসদ সদস্য ছিলেন। আর জাসদ (ইনু) দলের একমাত্র নারী প্রার্থী বর্তমান সংসদের সংসদ সদস্য।
এছাড়া স্বতন্ত্র নারী প্রার্থী ২৬ জনের ৫ জন বিভিন্ন সময় সংরক্ষিত ও সরাসরি ভোটের সংসদ সদস্য ছিলেন।
বরিশাল-৪ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন দলটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ। মঙ্গলবার (জানুয়ারী ২) শাম্মী আহমেদের প্রার্থিতা ফিরে পেতে দায়ের করা আপিলের আবেদন (লিভ টু আপিল) খারিজ করে দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। ফলে শাম্মী আহমেদ দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।
তার বাবা মহিউদ্দিন আহমেদ ছিলেন আওয়ামী লীগের বড় নেতা।
শাম্মী আহমেদ বলেন, "রাজনীতিতে নারীদের জন্য বিশাল প্রতিকুলতা রয়েছে। সবচেয়ে বড় প্রতিকূলতা সামাজিক, অর্থাৎ সমাজ নারী নেতৃত্বকে মেনে নিতে চায় না। আবার দলের মধ্যে প্রতিযোগিতার বিষয় থাকে। আবার দলগুলো যখন নির্বাচনে মনোনয়ন দেয়, তখন দেখে জয়ী হওয়ার প্রার্থী কে। কারণ তাকে তো ক্ষমতায় আসতে হবে। শুধু নারীকে সামনে নিয়ে আসবো বা নারীকে মনোনয়ন দিবো সেটা তো হয় না। সবকিছু বিচার-বিশ্লেষন করে যে নারী নির্বাচনে জয়ী হয়ে আসতে পারবে বলে মনে, তখন সেইভাবে দেওয়া হয়।"
ঢাকা-১৮ আসন থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী শেরিফা কাদের। তিনি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরর স্ত্রী। তিনি গত সংসদে সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্যও ছিলেন।
রাজনীতিবিদ ও মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত মানিক চৌধুরী মেয়ে আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী এবারের নির্বাচনে হবিগঞ্জ-১ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী লড়ছেন। যিনি দশম সংসদে আওয়ামী লীগের সংরক্ষিত আসনের সদস্য সদস্য ছিলেন।
তিনি বলেন, "পেশী শক্তির দিক থেকে নারীদের পিছিয়ে রাখতে সফল হয় পুরুষ প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা। আমার পেশী শক্তি নেই, আমি জনগণের কাছে যাচ্ছি। কিন্তু বিপক্ষ দলের সমর্থকরা বলে বেড়াচ্ছে- তোমরা ভোট দিবা কেয়া চৌধুরীকে, কিন্তু ভোট অটো চলে যাবে। আর আমার বিপক্ষ দল টাকা বিলিয়ে বেড়াচ্ছে। এটা সাধারণ জনগণ কিন্তু পাচ্ছে না, তারা যাচ্ছে ক্ষমতাবান লোকদের কাছে, যারা ভোটার না। তাদের কাছ থেকে তারা ক্ষমতা আনতেছে। যে ক্ষমতায় কিছু ওলট-পালট করা যায় আরকি।"
নারীদের রাজনীতিতে নেতৃত্ব দেয়ার জায়গায় কম আস্তে পৰ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক শান্তনু মজুমদার বলেন, নির্বাচনে রাজনীতিতে নারীর সংখ্যা কম এটা একটা "আক্ষেপের বিষয়"। দ্বিতীয় হচ্ছে, পরিবারের বাইরে নারীদের খুব একটা দেখা যায় না।
"সবকিছুর পরেও কিছু নারীকে রাজনীতিতে দেখা যায়, তারা বিভিন্ন পদ-পদবীতে আছেন। কিন্তু আসলে তারা রাজনীতিবিদ না। এরা হচ্ছে কারও স্ত্রী, কারও ভাবী, কারও মেয়ে," বলেন শান্তনু মজমুদার। তিনি আরও বলেন, "এই নির্বাচনে যারা নারী প্রার্থী রয়েছে, তারা অনেকেই প্রার্থী হয়েছেন পরিবারের সুবাদে। আর কিছু অতি ক্ষুদ্র দলের কিছু স্বাধীনচেতা নারী আছেন, যারা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এটা তাদের ব্যক্তিত্বের বহিঃপ্রকাশ। কিন্তু ভোটের ক্ষেত্রে তো এরা গেম চেঞ্জার না। অর্থাৎ ভোট করে তারা জয়ী হয়ে আসতে পারে না," বলে মন্তব্য করেন তিনি।
রাজনীতিতে নারী অগ্রগতিতে প্রধান বাধা পেশী শক্তি, অর্থ ও ধর্মীয় কুসংস্কার
বিশ্লেষকরা বলছেন, পেশী শক্তি, অর্থ ও ধর্মীয় পশ্চাৎপদ ধারণা, প্রধানত এই তিন কারণে রাজনীতিতে নারীর অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে । তাছাড়া পারিবারিক, সামাজিক কারণে এবং উচ্চশিক্ষায় নারীর হার কম হওয়াও রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
অধ্যাপক শান্তনু মজুমদার বলেন, "বাংলাদেশে নারী ঘরের বাইরে আসার ক্ষেত্রে অনেক উন্নতি হয়েছে। নারী চাকরি করছে। নারী সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনেও জড়িত আছে। এটা মোটামুটি উপজেলা পর্যায়ে দেখা যায়। কিন্তু রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ, এটার জন্য আমাদের সমাজ এখনো তৈরি হয়নি। শুধু রাজধানী ঢাকা দিয়ে কথা বললে তো হবে না, সারাদেশ দেখতে হবে। আমাদের সমাজে রাজনীতিতে যারা ধর্মের ব্যবহার করেন, সমাজপতি ও মুরুব্বিদের একটা অংশ, তারা এখন রাজনীতিতে নারীদের দেখবার মতো অভ্যস্ত হয়ে উঠে নাই। আবার পরিবারের নারীকে রাজনীতিতে অভ্যস্ত হতে দেওয়ার লোক খুব বেশি খুজেঁ পাওয়া যায় না।"
রাজনীতি করতে পেশী শক্তি, নেটওয়ার্ক ও সার্বক্ষণিক অ্যাভেলেবল থাকা লাগে বলে উল্লেখ করে শান্তনু মজুমদার বলেন, "এইগুলো নিয়ে বাংলাদেশ কেন, পৃথিবীর বহুদেশেই নারীরা সংগ্রাম করছেন। এই বাস্তবতায় একটা দল যখন নির্বাচনে প্রার্থী দেয় তখন জয়ী হবার মতো প্রার্থী খোঁজা হয়, সেখানে বুদ্ধিজীবি বা সামাজিক দায়িত্বপালনকারী ব্যক্তি খোঁজা হয় না। এই জায়গাতে এসে নারীরা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ঝরে পড়ে।"
[caption id="attachment_12247" align="aligncenter" width="407"] শেখ হাসিনা[/caption]
সমাজকর্মী খুশি কবির ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, "আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনে নারী প্রার্থী দেওয়া সময় একদম নিখুঁত খোঁজেন। যার সব ধরণের যোগ্যতা থাকতে হবে, কোনও ক্রটি থাকা যাবে না। কিন্তু পুরুষের ক্ষেত্রে তারা সেটা বিবেচনা করে না। অর্থাৎ নারীকে মনোনয়ন দেওয়ার যেসব যোগ্যতা, দক্ষতা খোঁজা হয়, পুরুষের ক্ষেত্রে সেটা হয় না। এটাও রাজনীতিতে নারীদের পিছিয়ে পড়ার কারণ।"
"দ্বিতীয়ত, এখন আমাদের যে ধরণের নির্বাচনী ব্যবস্থা রয়েছে, সেখানে যথেষ্ট লোকবল ও অর্থবিত্ত প্রধান। আগে যেমন প্রার্থীদের পাড়া-মহাল্লায় গিয়ে গণসংযোগের মাধ্যমে বোঝাতে হতো সে কেন আসছে, সে কেন ভোট চায়। এখন তো নির্বাচন হয়ে গেছে টাকার খেলা। যেটা নারীদের নেই।"
খুশি কবিরের মতে, রাজনৈতিক দলের তৃণমূলে নারীরাই বেশি কাজ করে। "আসলে নারীকে ব্যবহার করা হয় কর্মী হিসেবে, কিন্তু নেতৃত্ব দেওয়ার মতো করে গড়ে তোলার সহযোগিতা কম দেয় দলগুলো।"
"মূলত রাজনীতি ও নির্বাচনে নারীর তিনটা বিষয় বাধা হিসেবে আমি দেখছি, একটা হলো দলগুলোর সদিচ্ছার অভাব, দুই হলো নারীকে সমানভাবে গ্রহণ করার মানসিকতা না থাকা। তৃতীয় হচ্ছে- পেশী শক্তি, অর্থ এবং সহিংস পরিবেশ।"
[caption id="attachment_12248" align="aligncenter" width="369"] খালেদা জিয়া[/caption]
বড় রাজনৈতিক দলগুলো নারী বান্ধব নয়
তিনি আরো বলেন, "এরপরও যদি কোনও নারী তার পুরুষ সহকর্মীর সঙ্গে টক্কর দিয়ে চান, তখন তার বিরুদ্ধে 'কলঙ্ক' ছড়ানো হয়।"
নারীদের রাজনৈতিক দলগুলোতে কম জায়গা দেওয়া হয় বলে উল্লেখ করে শাসসুল আলম বলেন, "নির্বাচন কমিশনের যে প্রত্যেক দলে ৩৩ শতাংশ নারী নেতৃত্ব থাকার বিধান করেছিলো, সেটি আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির মতো বড়দলগুলোই এখনও পূরণ করে নাই। তার মানে হচ্ছে দলগুলো নারীবান্ধব পরিবেশ নেই, তারাই চায় না রাজনীতিতে নারীরা আসুক।"
‘বাংলাদেশের নির্বাচনী ব্যবস্থ্য ও ফলাফল’ বইয়ে বলা হয়েছে ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশের প্রথম নির্বাচনে নারীদের জন্য ১৫ টি আসন সংরক্ষিত রাখা হয়। এরপর ১৯৭৯ সালের দ্বিতীয় সংসদে সেটা বাড়িয়ে ৩০ টি করা। পরবর্তীতে ২০০১ সালের অষ্টম সংসদে সেটি ৪৫ টি করা হয়। আর সর্বশেষ ২০১৪ সালের দশম সংসদে সেটি বাড়িয়ে ৫০ টি আসন নারীদের জন্য সংরক্ষিত করা হয়।
কিন্তু, সংরক্ষিত আসন নারীদের পিছিয়ে পড়ার ভূমিকা রাখা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে রাজনীতিবিদ ও বিশ্লেষকদের মধ্যে। তবে, সবাই মনে করেন রাজনীতিতে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়িয়ে এই সংরক্ষিত ব্যবস্থা ক্রমান্বয়ে বাতিল করে দিতে হবে।
শাম্মী আহমেদ বলেন, "সংরক্ষিত আসন এটাই প্রমাণ করে যে নারীরা আসলে এখনও সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে অনেক পেছনে। নারীর ক্ষমতায়নের জন্য, রাজনীতিতে নারীকে পরিচিত করার জন্যসহ সবকিছু মিলিয়ে এখনও সংরক্ষিত আসন ব্যবস্থ্যা রাখা হয়েছে।"
রাজনীতিতে নারীদের এগিয়ে যাওয়া পর্যন্ত সংরক্ষিত আসন দরকার বলে মনে করছেন শেরিফা কাদের। তিনি বলেন, "যেহেতু নারীকে সরাসরি ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে দেওয়া হচ্ছে কম তাই সংরক্ষিত আসন দরকার। প্রত্যেকটি দলে যদি ৩৩ শতাংশ নারী আসতে পারতো তখন সংরক্ষিত আসনের দরকার হতো না। তাই আরও কয়েক বছর সংরক্ষিত নারী আসন থাকার দরকার আছে।"
সংরক্ষিত আসনে যেসব নারী সংসদ সদস্য হয়েছেন তাদের কেউ কেউ সংসদে ও তাদের এলাকায় ভালো ভূমিকাও রখেছেন বলে উল্লেখ করেন খুশি কবির। তিনি বলেন, "সংরক্ষিত নারী আসনের উদ্দেশ্য ছিলো সরাসরি ভোটের জন্য নারীদের তৈরি করা। কয়েকজন সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য পরে ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। ফলে, আমি মনে এখন আর নারীদের সংরক্ষিত আসনে সদস্য না করে তাদেরকে সরাসরি ভোটে নিয়ে আসা উচিত। সংরক্ষিত পদ্ধতি বিলুপ্ত করা দরকার। আর চাইলে আনুপাতিক হারে নির্বাচন করা যেতে পারে।" ভয়েস অফ আমেরিকা
সম্পাদক : মাহমুদ আনোয়ার হোসেন
নির্বাহী সম্পাদক : জুবায়ের রহমান চৌধুরী
বার্তা সম্পাদক : খালেকুজ্জামান পান্নু
বার্তা ও সম্পাদকীয় কার্যালয় : বাড়ি # ৬৩, সড়ক # ২১,
রূপনগর আ/এ, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬।
বাণিজ্যিক কার্যালয় : গুলশান-বাড্ডা লিংক রোড, ঢাকা-১২১২।
ফোন : 01731-488397,01552381515, 01751345643
হোয়াটসএ্যাপ : 01826567123
Copyright © 2024 সারাবেলার সংবাদ. All rights reserved.