অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেছেন, বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধের ক্ষেত্রে কিছুটা চাপ আছে।
তিনি বলেন, “প্রেসার কিছুটা আছে। তবে খুব যে বেশি প্রেসার বিষয়টি সে রকম না। ঋণ পরিশোধ করা হচ্ছে।”
এ জন্য তিনি বৈশ্বিক প্রভাব ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধকে কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন।
মূল্যস্ফীতির বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, “মূল্যস্ফীতি নিয়ে কিছুটা অস্বস্তি আছে। এটি একটির জন্য কমে যায়, আবার অন্য আরেকটির জন্য বাড়ে। জোর করে কী করবেন? ধৈর্য ধরুন, সব ঠিক হয়ে যাবে।”
বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানী ঢাকার শেরেবাংলা নগরে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে (ইআরডি) আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) বাংলাদেশের চিফ অফ মিশন আবদুসাত্তার ইসোয়েভের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, “আইওএম বিদেশি অভিবাসীদের নিয়ে কাজ করে। তারা প্রবাসীদের আনার জন্য কাজ করছে। ভবিষ্যতেও তারা এ ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।”
ঋণ পরিশোধে বাংলাদেশের চাপ
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়ায় দুর্বল হয়েছে বিদেশি ঋণ পরিশোধের সামর্থ্য। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ব্যবহার করে বিদেশি ঋণের প্রায় ৭৪ শতাংশ পরিশোধের সক্ষমতা ছিল বাংলাদেশের। এখন এ সক্ষমতা নেমে এসেছে প্রায় এক-চতুর্থাংশে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্ থেকে জানা যায়, ২০১৫-১৬ অর্থবছর শেষে বাংলাদেশের মোট বিদেশি ঋণের পরিমাণ ছিল ৪ হাজার ১১৭ কোটি ডলার। আর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ৩ হাজার কোটি ডলারের বেশি। তখন বিদেশি ঋণের তুলনায় রিজার্ভের অনুপাত ছিল ৭৩ দশমিক ৭০ শতাংশ। অর্থাৎ দেশের রিজার্ভ দিয়েই ওই সময় বিদেশী ঋণের ৭৩ দশমিক ৭০ শতাংশ পরিশোধ করা সম্ভব ছিল। এরপর থেকে রিজার্ভ বাড়লেও বিদেশি ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা ক্রমাগত দুর্বল হয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে বিদেশি ঋণ ও রিজার্ভের অনুপাত ছিল মাত্র ২৪ দশমিক ৮০ শতাংশ।
২০২৩ সালে ২৯ নভেম্বর বাংলাদেশের গ্রস রিজার্ভ ছিল মাত্র ২৫ বিলিয়ন ডলার। যদিও আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী (বিপিএম৬) রিজার্ভ ছিল ১৯ বিলিয়ন ডলারের ঘরে। এর মধ্যে ব্যবহারযোগ্য নিট রিজার্ভ ছিল ১৬ বিলিয়ন ডলারেরও কম।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরেই বাংলাদেশের বিদেশি ঋণের স্থিতি ১০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে সরকার ও রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলোর ঋণ ৭৯ বিলিয়ন ডলার। বাকি ২১ বিলিয়ন ডলার ঋণ নিয়েছে বেসরকারি খাত। বিদেশি বিভিন্ন উৎস থেকে নেওয়া ঋণের প্রায় ৮৪ শতাংশ দীর্ঘমেয়াদি। বাকি ১৬ শতাংশ বা ১৬ বিলিয়ন ডলারের ঋণ স্বল্পমেয়াদি।
বিদেশি ঋণসংক্রান্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৫-১৬ অর্থবছর শেষে দেশের স্বল্পমেয়াদি বিদেশি ঋণের স্থিতি ছিল রিজার্ভের মাত্র ২৩ শতাংশ। এরপর থেকে ক্রমাগতভাবে রিজার্ভের তুলনায় স্বল্পমেয়াদি বিদেশি ঋণের অনুপাত বেড়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছর শেষে এ অনুপাত ৫০ শতাংশে গিয়ে ঠেকে। আর ২০২২-২৩ অর্থবছর শেষে রিজার্ভের তুলনায় স্বল্পমেয়াদি বিদেশি ঋণের অনুপাত দাঁড়ায় ৬৫ দশমিক ৪০ শতাংশে। ২০২৩–২৪ অর্থবছরে রিজার্ভ কমে যাওয়ায় এই অনুপাত আরও বেড়েছে।
সম্পাদক : মাহমুদ আনোয়ার হোসেন
নির্বাহী সম্পাদক : জুবায়ের রহমান চৌধুরী
বার্তা সম্পাদক : খালেকুজ্জামান পান্নু
বার্তা ও সম্পাদকীয় কার্যালয় : বাড়ি # ৬৩, সড়ক # ২১,
রূপনগর আ/এ, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬।
বাণিজ্যিক কার্যালয় : গুলশান-বাড্ডা লিংক রোড, ঢাকা-১২১২।
ফোন : 01731-488397,01552381515, 01751345643
হোয়াটসএ্যাপ : 01826567123
Copyright © 2024 সারাবেলার সংবাদ. All rights reserved.