উপজেলা নির্বাচন: ক্ষমতাসীনদের তৃণমূলে সংঘাত বাড়বে
- আপডেট সময় : ১২:২৫:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ মার্চ ২০২৪ ১২৭ বার পঠিত
২১ মার্চ নির্বাচন কমিশন প্রথম ধাপে ১৫২টি উপজেলায় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে। দেশে মোট ৪৯৫টি উপজেলার প্রথম ধাপের ১৫২ টি উপজেলায় নির্বাচন হবে ৮ মে। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী প্রথম ধাপে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত। মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ১৭ এপ্রিল, প্রত্যাহারের শেষ সময় ২২ এপ্রিল। ১৫২ উপজেলার মধ্যে ২২ উপজেলায় ভোট হবে ইভিএমে।
প্রথম ধাপের পর ২৩ মে দ্বিতীয়, ২৯ মে তৃতীয় এবং ৫ জুন শেষ ধাপের ভোট হবে। এসব উপজেলায় চেয়ারম্যান, সাধারণ ভাইস চেয়ারম্যান ও সংরক্ষিত ভাইস চেয়ারম্যান পদে এই নির্বাচন হয়ে থাকে।
এবার আওয়ামী লীগ দলীয় প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেবেনা। তারা কোনো প্রার্থীকেও মনোনয়ন দেবেনা। এটা তারা আগেই নির্বাচন কমিশনে জানিয়ে দিয়েছে। ফলে উপজেলা নির্বাচনে এবার প্রার্থী অনেক বেশি হবে। এরইমধ্যেওই প্রার্থীরা তাদের কাজ শুরু করে দিয়েছেন। আর অন্যান্য দল থেকেও একাধিক প্রার্থী হবে। বিএনপি এই নির্বাচনে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত এরইমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে। তবে স্থানীয় পর্যায়ে অনেকে এই সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে প্রার্থী হতে পারেন বলে জানাগেছে। কারণ দলীয় কোনো প্রতীক না থাকায় তার সুুবিধা তারাও নেবেন।
বরিশালের বানারিপাড়া উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা শরিফুদ্দিন আহমেদ কিসলু বলেন,” এবার দলীয়ভাবে নির্বাচন না হওয়ায় প্রার্থী অনেক বেশি হবে। অনেকেই তাদের জনপ্রিয়তা যাচাই করতে নামবেন। আমাদের উপজেলায় আওয়ামী লীগ থেকেই চেয়ারম্যান পদে একাধিক প্রার্থী হচ্ছেন। এরফলে তৃণমূল আওয়ামী লীগে দ্বন্দ্ব ও বিভেদ বাড়বে। ”
তার কথায়,” তারপরও দলের এই সিদ্ধান্তের কারণে নির্বাচন প্রতিযোগিতামূলক হবে এবং ভোট কেন্দ্রে ভোটারের উপস্থিতি বাড়বে।”
২০১৯ সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেয়নি। আওয়ামী লীগ দলীয় প্রতীকে অংশ নেয়। তারপরও প্রায় প্রত্যেক উপজেলায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলো। ৩২ শতাংশ উপজেলায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা স্বতন্ত্র হিসাবে নির্বাচন করে জয়ী হয়। আর ওই নির্বাচনে ১১৫ জন আওয়ামী লীগের প্রার্থী বিনা ভোটে( বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। আর নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ছিলো খুবই কম। আর বিএনপির হাতেগোনা কয়েকজন দলের সিদ্ধান্তের বাইওে গিয়ে স্বতন্ত্র হিসাবে অংশ নেন।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন বলেন,” এবার দলীয়ভাবে আমাদের কোনো প্রার্থী থাকছেনা। এটা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত।দলের যে কেউ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন। এখন এটা নিয়ে যদি কেউ গ্রুপিং, কোন্দল বা সংঘাত তৈরি করে তাদের বিরুদ্ধে দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। জননেত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে কিছু করা যাবেনা।”
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,” নির্বাচনে দলীয় কোনো মনোনয়ন না থাকায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা ভালো হবে। অনেক প্রার্থী হবে। ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থী বেছে নিতে পারবেন। আর ভোটারের উপস্থিতিও বাড়বে।”
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও বিএনপি অংশ না নেয়ায় আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী দেয়ার পাশাপাশি দল থেকে স্বতন্ত্রদের উৎসাহিত করেছে নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করতে ও ভোটার উপস্থিতি বাড়তে।
এদিকে বিএনপির তৃণমূলে কথা বলে জানা গেছে, কিছু এলাকায় কেউ কেউ উপজেলায় প্রার্থী হতে আগ্রহী হলেও তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। এর আগে উপজেলায় এবং পৌরসভায় যারা দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে প্রার্থী হয়েছেন তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে। বিজয়ী হয়েও তারা বহিস্কার এড়াতে পারেননি। রাজশাহী পুটিয়া পৌরসভার মেয়র এবং উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন খান বলেন,” আমি ধানের শীষ নিয়ে মেয়র হয়েছি ২০২০ সালে। তখন পৌর নির্বাচনে দল অনুমতি দিয়েছিলো। কিন্তু এবার উপজেলা পরিষদে দল অনুমতি দিচ্ছেনা। কেউ প্রার্থী হলে তাকে বহিষ্কার করা হবে।”