ঢাকা ০৫:২৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

উজ্জ্বল ত্বকের রহস্য

সারাবেলা সংবাদ ডেস্ক :
  • আপডেট সময় : ০৭:২৯:৪৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ অগাস্ট ২০২৩ ১৩৬ বার পঠিত

ত্বকের যত্ন নেওয়া অনেকের কাছেই খুব ঝামেলার মনে হয়। মুখ পরিষ্কার রাখা, নিয়মিত স্ক্রাব ব্যবহার করা তো রয়েছেই। উপরন্তু ফেসপ্যাক, মাস্ক, ময়েশ্চারাইজার, টোনার ইত্যাদি হাজারো প্রোডাক্টের ঝামেলা। অবশ্য তাতে যদি কাজের কাজ হয়, তাহলে এই পরিশ্রমটুকু করে নিতে হয়তো অনেকেই আপত্তি করবেন না।

আসলে শরীরের যেমন বিভিন্ন কাজ করতে সময়ে সময়ে খাবারের দরকার হয়, তেমনই ত্বকেরও সুন্দর এবং সুস্থ থাকার জন্য খাবার অর্থাৎ পুষ্টির প্রয়োজন। আর ত্বকের পুষ্টিতে যদি কোনো ঘাটতি না থাকে, তাহলে তার পরিচয় আপনার মুখে ফুটে উঠতে বাধ্য। বাড়িতে বসে সহজে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ানোর উপায় দেখে নিন-

কোরিয়ান স্কিনকেয়ার রেজিম : ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ানোর প্রসঙ্গে কথা না বলে উপায় নেই। পূর্ব এশিয়ার দেশ কোরিয়ায় মহিলারা দীপ্তিময়, উজ্জ্বল ত্বকের জন্য জগদ্বিখ্যাত। সম্প্রতি সেখানে এক ধরনের স্কিনকেয়ার রেজিম দারুণ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। নাম ‘গ্লাস স্কিন রেজিম’। অর্থাৎ ত্বক এতটাই মসৃণ এবং জেল্লাদার হবে, তাকে অনায়াসে কাচের স্বচ্ছতার সঙ্গে তুলনা করা চলে।

আর এ বিশেষ স্কিনকেয়ার রুটিন মেনে চলতে পারলে ফল অবধারিত। একে ‘১০ স্টেপ কোরিয়ান স্কিনকেয়ার রেজিম’ও বলা হয়। ১০ ধাপের প্রথম ধাপ হলো অয়েল ক্লেনজারের ব্যবহার। অয়েল বেসড কোনো ক্লেনজার দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে তারপর ব্যবহার করা হয় ফোম বেসড ক্লেনজার। এরপর স্ক্রাব ও টোনার ব্যবহার করে বিশেষ ধরনের এসেন্স ব্যবহার করা হয়।

ত্বকে বিশেষ কোনো সমস্যা থাকলে সেই অনুযায়ী ট্রিটমেন্ট বাম বা ক্যাপসুল ব্যবহার করা হয় এরপর। তারপর পালা ফেসমাস্কের। এই স্কিনকেয়ারের শেষ তিনটি ধাপ হলো আন্ডার আইক্রিম, ময়েশ্চারাইজার এবং সানস্ক্রিন। প্রতিদিনই এই ১০টা স্টেপ মেনে চলতে হবে। এই রুটিন বেশ সময়সাপেক্ষ হলেও মেনে চলতে পারলে এক সপ্তাহেই ত্বকের ভোল পাল্টে যাবে।

অয়েল ম্যাসাজ : রূপচর্চার এত লম্বা লিস্ট পড়ে ঘাবড়ে যাবেন না। অনেকের পক্ষেই হয়তো এতটা সময় ধরে ত্বকের যত্ন নেওয়া সম্ভব নয়। যারা প্রতিদিন এতটা সময় দিতে না পারলেও ব্যস্ত রুটিন থেকে অন্তত ১০ মিনিট বের করতে পারবেন, তাদের জন্য আদর্শ হলো অয়েল ম্যাসাজ। ত্বকে চটজলদি জেল্লা আনতে ফেসিয়াল ম্যাসাজ খুব ভালো এবং সহজ একটি পদ্ধতি। এতে ত্বকে রক্ত চলাচল বাড়ে। ফলে ত্বক অনেক বেশি প্রাণবন্ত এবং জেল্লাদার দেখায়।

তবে এক্ষেত্রে নারকেল তেল বা সরষের তেল ব্যবহার না করাই ভালো। এ জাতীয় তেল বেশ ভারী হয় এবং তা ত্বকের রন্ধ্রের মুখ বন্ধ করে অ্যাকনের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। ফেসিয়াল ম্যাসাজের জন্য সব সময় হালকা ক্যারিয়ার অয়েল ব্যবহার করুন। মোরিঙ্গা অয়েল, ভিটামিন-ই অয়েল, জোজোবা অয়েল, আমন্ড অয়েল ইত্যাদি ম্যাসাজের জন্য আদর্শ। কয়েক ফোঁটা তেল হাতে নিয়ে তালুতে ঘষে নিন।

এবার তা মুখে ম্যাসাজ করুন। সব সময় আপওয়ার্ড স্ট্রোকে ম্যাসাজ করবেন। খুব জোরে ঘষবেন না। চোখের তলা, গাল ইত্যাদি অংশে আলত করে চাপ দিয়ে ম্যাসাজ করুন। প্রতিদিন মোটামুটি ১০ মিনিট ফেসিয়াল ম্যাসাজ করলেই দেখবেন ত্বক আগের চেয়ে অনেক বেশি কোমল এবং মসৃণ দেখাচ্ছে।

চটজলদি উজ্জ্বলতার জন্য : ত্বকে ইনস্ট্যান্ট উজ্জ্বলতা আনতে একাধিক ফেসপ্যাক ব্যবহার করতে পারেন। তবে নিয়মিত ত্বকের যত্ন নিলে যে ফলটা পাবেন, তা কিন্তু কখনোই এই ইনস্ট্যান্ট প্যাকে আসবে না। বলাই বাহুল্য তা দীর্ঘস্থায়ীও হবে না। তবে সময়ের অভাব থাকলে উপায় তো আর কিছু নেই। ত্বকে চটজলদি উজ্জ্বলতা আনতে-

হলুদ : আধ চা চামচ হলুদের গুঁড়া এবং চার চা চামচ বেসন পরিমাণমতো দুধ দিয়ে গুলে ঘন মিশ্রণ তৈরি করুন। মুখে ও গলায় এই প্যাক লাগিয়ে ২০ মিনিট রেখে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। হলুদে ত্বকের উপকারী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকায় এই প্যাক ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করবে।

গাজর : গাজর একদম ঝুরি করে কেটে রস বের করে নিন। এতে অল্প মধু এবং সামান্য টকদই মিশিয়ে মুখে লাগাতে পারেন। ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। গাজরে থাকে ভিটামিন এ, যা ত্বক টানটান রাখতে সাহায্য করে। ফলে ত্বক মসৃণ থাকে।

অ্যালোভেরা : ত্বক নরম থাকলে ও ত্বকে আর্দ্রতার পরিমাণ সঠিক থাকলে, ত্বক এমনিতেই স্বাস্থ্যোজ্জ্বল দেখাবে। আর এই দুয়ের জন্যই অ্যালোভেরা মোক্ষম দাওয়াই। এক টেবিল চামচ অ্যালোভেরা জেল, এক চা চামচ মধু এবং এক চা চামচ দুধ একসঙ্গে মিশিয়ে মুখে লাগান। ২০ মিনিট রেখে ঈষদুষ্ণ পানিতে দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

বেকিং সোডা : এক চা চামচ বেকিং সোডা, এক চা চামচ মধু এবং আধ চা চামচ অলিভ অয়েল একসঙ্গে মিশিয়ে মুখে লাগান। ত্বকের মৃতকোষ দূর করতে এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে এটি কার্যকর। এই প্যাক ব্যবহারে ইনস্যান্ট উজ্জ্বলতা পাওয়া যাবে। চাইলে এগুলো সপ্তাহে দু-তিন দিন মুখে লাগাতে পারেন।

সারাবেলার সংবাদ/ জেডআরসি/ ২১ আগস্ট ২০২৩

Facebook Comments Box
ট্যাগস :

উজ্জ্বল ত্বকের রহস্য

আপডেট সময় : ০৭:২৯:৪৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ অগাস্ট ২০২৩

ত্বকের যত্ন নেওয়া অনেকের কাছেই খুব ঝামেলার মনে হয়। মুখ পরিষ্কার রাখা, নিয়মিত স্ক্রাব ব্যবহার করা তো রয়েছেই। উপরন্তু ফেসপ্যাক, মাস্ক, ময়েশ্চারাইজার, টোনার ইত্যাদি হাজারো প্রোডাক্টের ঝামেলা। অবশ্য তাতে যদি কাজের কাজ হয়, তাহলে এই পরিশ্রমটুকু করে নিতে হয়তো অনেকেই আপত্তি করবেন না।

আসলে শরীরের যেমন বিভিন্ন কাজ করতে সময়ে সময়ে খাবারের দরকার হয়, তেমনই ত্বকেরও সুন্দর এবং সুস্থ থাকার জন্য খাবার অর্থাৎ পুষ্টির প্রয়োজন। আর ত্বকের পুষ্টিতে যদি কোনো ঘাটতি না থাকে, তাহলে তার পরিচয় আপনার মুখে ফুটে উঠতে বাধ্য। বাড়িতে বসে সহজে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ানোর উপায় দেখে নিন-

কোরিয়ান স্কিনকেয়ার রেজিম : ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ানোর প্রসঙ্গে কথা না বলে উপায় নেই। পূর্ব এশিয়ার দেশ কোরিয়ায় মহিলারা দীপ্তিময়, উজ্জ্বল ত্বকের জন্য জগদ্বিখ্যাত। সম্প্রতি সেখানে এক ধরনের স্কিনকেয়ার রেজিম দারুণ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। নাম ‘গ্লাস স্কিন রেজিম’। অর্থাৎ ত্বক এতটাই মসৃণ এবং জেল্লাদার হবে, তাকে অনায়াসে কাচের স্বচ্ছতার সঙ্গে তুলনা করা চলে।

আর এ বিশেষ স্কিনকেয়ার রুটিন মেনে চলতে পারলে ফল অবধারিত। একে ‘১০ স্টেপ কোরিয়ান স্কিনকেয়ার রেজিম’ও বলা হয়। ১০ ধাপের প্রথম ধাপ হলো অয়েল ক্লেনজারের ব্যবহার। অয়েল বেসড কোনো ক্লেনজার দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে তারপর ব্যবহার করা হয় ফোম বেসড ক্লেনজার। এরপর স্ক্রাব ও টোনার ব্যবহার করে বিশেষ ধরনের এসেন্স ব্যবহার করা হয়।

ত্বকে বিশেষ কোনো সমস্যা থাকলে সেই অনুযায়ী ট্রিটমেন্ট বাম বা ক্যাপসুল ব্যবহার করা হয় এরপর। তারপর পালা ফেসমাস্কের। এই স্কিনকেয়ারের শেষ তিনটি ধাপ হলো আন্ডার আইক্রিম, ময়েশ্চারাইজার এবং সানস্ক্রিন। প্রতিদিনই এই ১০টা স্টেপ মেনে চলতে হবে। এই রুটিন বেশ সময়সাপেক্ষ হলেও মেনে চলতে পারলে এক সপ্তাহেই ত্বকের ভোল পাল্টে যাবে।

অয়েল ম্যাসাজ : রূপচর্চার এত লম্বা লিস্ট পড়ে ঘাবড়ে যাবেন না। অনেকের পক্ষেই হয়তো এতটা সময় ধরে ত্বকের যত্ন নেওয়া সম্ভব নয়। যারা প্রতিদিন এতটা সময় দিতে না পারলেও ব্যস্ত রুটিন থেকে অন্তত ১০ মিনিট বের করতে পারবেন, তাদের জন্য আদর্শ হলো অয়েল ম্যাসাজ। ত্বকে চটজলদি জেল্লা আনতে ফেসিয়াল ম্যাসাজ খুব ভালো এবং সহজ একটি পদ্ধতি। এতে ত্বকে রক্ত চলাচল বাড়ে। ফলে ত্বক অনেক বেশি প্রাণবন্ত এবং জেল্লাদার দেখায়।

তবে এক্ষেত্রে নারকেল তেল বা সরষের তেল ব্যবহার না করাই ভালো। এ জাতীয় তেল বেশ ভারী হয় এবং তা ত্বকের রন্ধ্রের মুখ বন্ধ করে অ্যাকনের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। ফেসিয়াল ম্যাসাজের জন্য সব সময় হালকা ক্যারিয়ার অয়েল ব্যবহার করুন। মোরিঙ্গা অয়েল, ভিটামিন-ই অয়েল, জোজোবা অয়েল, আমন্ড অয়েল ইত্যাদি ম্যাসাজের জন্য আদর্শ। কয়েক ফোঁটা তেল হাতে নিয়ে তালুতে ঘষে নিন।

এবার তা মুখে ম্যাসাজ করুন। সব সময় আপওয়ার্ড স্ট্রোকে ম্যাসাজ করবেন। খুব জোরে ঘষবেন না। চোখের তলা, গাল ইত্যাদি অংশে আলত করে চাপ দিয়ে ম্যাসাজ করুন। প্রতিদিন মোটামুটি ১০ মিনিট ফেসিয়াল ম্যাসাজ করলেই দেখবেন ত্বক আগের চেয়ে অনেক বেশি কোমল এবং মসৃণ দেখাচ্ছে।

চটজলদি উজ্জ্বলতার জন্য : ত্বকে ইনস্ট্যান্ট উজ্জ্বলতা আনতে একাধিক ফেসপ্যাক ব্যবহার করতে পারেন। তবে নিয়মিত ত্বকের যত্ন নিলে যে ফলটা পাবেন, তা কিন্তু কখনোই এই ইনস্ট্যান্ট প্যাকে আসবে না। বলাই বাহুল্য তা দীর্ঘস্থায়ীও হবে না। তবে সময়ের অভাব থাকলে উপায় তো আর কিছু নেই। ত্বকে চটজলদি উজ্জ্বলতা আনতে-

হলুদ : আধ চা চামচ হলুদের গুঁড়া এবং চার চা চামচ বেসন পরিমাণমতো দুধ দিয়ে গুলে ঘন মিশ্রণ তৈরি করুন। মুখে ও গলায় এই প্যাক লাগিয়ে ২০ মিনিট রেখে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। হলুদে ত্বকের উপকারী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকায় এই প্যাক ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করবে।

গাজর : গাজর একদম ঝুরি করে কেটে রস বের করে নিন। এতে অল্প মধু এবং সামান্য টকদই মিশিয়ে মুখে লাগাতে পারেন। ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। গাজরে থাকে ভিটামিন এ, যা ত্বক টানটান রাখতে সাহায্য করে। ফলে ত্বক মসৃণ থাকে।

অ্যালোভেরা : ত্বক নরম থাকলে ও ত্বকে আর্দ্রতার পরিমাণ সঠিক থাকলে, ত্বক এমনিতেই স্বাস্থ্যোজ্জ্বল দেখাবে। আর এই দুয়ের জন্যই অ্যালোভেরা মোক্ষম দাওয়াই। এক টেবিল চামচ অ্যালোভেরা জেল, এক চা চামচ মধু এবং এক চা চামচ দুধ একসঙ্গে মিশিয়ে মুখে লাগান। ২০ মিনিট রেখে ঈষদুষ্ণ পানিতে দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

বেকিং সোডা : এক চা চামচ বেকিং সোডা, এক চা চামচ মধু এবং আধ চা চামচ অলিভ অয়েল একসঙ্গে মিশিয়ে মুখে লাগান। ত্বকের মৃতকোষ দূর করতে এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে এটি কার্যকর। এই প্যাক ব্যবহারে ইনস্যান্ট উজ্জ্বলতা পাওয়া যাবে। চাইলে এগুলো সপ্তাহে দু-তিন দিন মুখে লাগাতে পারেন।

সারাবেলার সংবাদ/ জেডআরসি/ ২১ আগস্ট ২০২৩

Facebook Comments Box