ঢাকা ০৬:২৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ৪ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo আওয়ামী দোসরদের গুরুত্বপূর্ণ পদে রেখে সরকার সফল হবে না: তারেক Logo স্বৈরাচারের হিংস্র থাবা থেকে দেশ এখনও মুক্ত নয়: রিজভী Logo হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে যেভাবে ইসরায়েল খুঁজে বের করে হত্যা করেছে Logo সোনারগাঁওয়ে বিদ্যুতায়িত হয়ে যুবকের মৃত্যু Logo সংবাদ প্রকাশের পর বৃদ্ধা মহিলার ঠাই হলো স্বামীর বসত ভিটায় Logo সোনারগাঁয়ে প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সরকারি হালট দখল করে বালু ভরাট Logo ‘সংস্কারের ধীর গতি’ ও কাজের গুরুত্ব নির্ধারণ নিয়ে সমালোচনা, কী বলছেন উপদেষ্টারা? Logo আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গণহত্যার বিচার কার্যক্রম শুরু আজ Logo বাড়তে পারে ঈদ ও পূজার সরকারি ছুটি Logo আগামী বছর থেকে আবারও মাধ্যমিকে বিভাগ বিভাজন শুরু

ইসলাম শিক্ষা বইয়ের মলাটে দুর্গার ছবি, সমালোচনার ঝড়

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৯:৫৪:৫৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ জানুয়ারী ২০২৪ ১৮২ বার পঠিত

বছরের প্রথমদিনে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা বই হাতে পেয়ে খুশিতে মাতোয়ারা হয়েছিল । কিন্তু সেই আনন্দে কিছুটা ভাটা পড়ছে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের। দুদিন পরই ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা বই ফেরত দিতে হচ্ছে তাদের। ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা বই ছাপায় বড় রকমের ভুলের কারণে তা তুলে নিচ্ছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি)।

বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হচ্ছে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলাম।

জানা গেছে, ১ জানুয়ারি উৎসবমুখর পরিবেশে সারাদেশে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়া হয়। তবে তৃতীয় শ্রেণির ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা বিষয়ের কিছু বইয়ের মলাটের নিচের অংশে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দেবী দুর্গার ছবি রয়েছে; যা হিন্দু ধর্ম শিক্ষার ইংরেজি ভার্সনের বইয়ের মলাট। দ্রুত বইটির ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এ নিয়ে শুরু হয়েছে তুমুল সমালোচনা।

বিষয়টি নজরে আসার পরপরই তৃতীয় শ্রেণির ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা বই তুলে নিতে স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছে এনসিটিবি।

 

এনসিটিবি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফরহাদুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, এটা ছাপাখানার ভুল। ভুলটা হলো ইসলাম শিক্ষা বইয়ের উল্টো পাশে হিন্দু ধর্ম শিক্ষা বইয়ের ইংরেজি ভার্সনের মলাট রয়ে গেছে। এটা জানার পরপরই আমরা বই তুলে নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছি। শুনেছি ৪০টি বইয়ে এমন ভুল হয়েছে। সাতক্ষীরার একটি স্কুলে এমন ভুল ছাপা বই পাওয়া গেছে। নতুন করে বই ছাপিয়ে দ্রুত শিক্ষার্থীদের বইটি দেওয়া হবে। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

তবে নাম প্রকাশ না করে এনসিটিবির বিতরণ শাখার এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানান, এখন ওয়েব মেশিনে বই ছাপা হয়। যদি ভুল হয়ে থাকে, তাহলে কয়েক হাজার বইয়ে একই রকম ভুল হওয়ার কথা। কিন্তু অল্প কিছু বইয়ে এ ধরনের ভুল হওয়ায় সন্দেহ বাড়ছে। এটা প্রেসের ভুল নাকি অন্য কোনো কিছু আছে, সেটা তদন্ত করা প্রয়োজন।

 

এদিকে, সাতক্ষীরা সদর উপজেলা এবং ঠাকুরগাঁওয়ের বেশ কয়েকটি স্কুলে তৃতীয় শ্রেণির এমন বই পেয়েছে শিক্ষার্থীরা। ঠাকুরগাঁওয়ের আমানউল্লাহ আমান নামে একজন অভিভাবক ভুলে ছাপা বইটির ছবি ও ভিডিও ফেসবুকে শেয়ার করে দ্রুত সংশোধনী দিতে অনুরোধ জানিয়েছেন।

 

আমানউল্লাহ আমান গণমাধ্যমকে বলেন, তৃতীয় শ্রেণির বইটিতে এমন ভুল দেখে খোঁজ নিলাম। দেখলাম আমাদের আশপাশের দুটি স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ইসলাম শিক্ষা বইয়ে একই ভুল। অন্য এলাকার খবর আমি জানি না।

 

সাতক্ষীরার কয়েকজন অভিভাবক বলছেন, তারা নিজেদের সন্তানের বইয়ে এটা দেখার পর অন্যদের একই কি না, তা দেখার জন্য খোঁজ-খবর নিয়েছেন। আশপাশের অনেকগুলো স্কুলে তারা একই ভুল দেখেছেন। বুধবার (৩ জানুয়ারি) শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বই নিয়ে নিয়েছেন শিক্ষকরা। দ্রুত তাদের নতুন বই দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে স্কুল থেকে।

 

এ বিষয়ে সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীম ভূঁইয়া গণমাধ্যমকে বলেন, প্রাথমিকভাবে ৫-১০টি স্কুলে ভুল বই পাওয়ার খবর জেনেছি। এর পরপরই সেগুলো তুলে এনেছি। তবে বইয়ের সংখ্যা কত তা তাৎক্ষণিকভাবে বলতে পারছি না।

 

সাতক্ষীরা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (ডিপিইও) হোসনে ইয়াসমিন করিমী গণমাধ্যমকে বলেন, সাতক্ষীরার সব উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ইসলাম শিক্ষা বই শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফেরত নেওয়া হচ্ছে। বইতে কোনো ভুল আছে কি না, সেটা যাচাই করা হবে।

 

Facebook Comments Box
ট্যাগস :

ইসলাম শিক্ষা বইয়ের মলাটে দুর্গার ছবি, সমালোচনার ঝড়

আপডেট সময় : ০৯:৫৪:৫৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ জানুয়ারী ২০২৪

বছরের প্রথমদিনে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা বই হাতে পেয়ে খুশিতে মাতোয়ারা হয়েছিল । কিন্তু সেই আনন্দে কিছুটা ভাটা পড়ছে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের। দুদিন পরই ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা বই ফেরত দিতে হচ্ছে তাদের। ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা বই ছাপায় বড় রকমের ভুলের কারণে তা তুলে নিচ্ছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি)।

বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হচ্ছে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলাম।

জানা গেছে, ১ জানুয়ারি উৎসবমুখর পরিবেশে সারাদেশে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়া হয়। তবে তৃতীয় শ্রেণির ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা বিষয়ের কিছু বইয়ের মলাটের নিচের অংশে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দেবী দুর্গার ছবি রয়েছে; যা হিন্দু ধর্ম শিক্ষার ইংরেজি ভার্সনের বইয়ের মলাট। দ্রুত বইটির ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এ নিয়ে শুরু হয়েছে তুমুল সমালোচনা।

বিষয়টি নজরে আসার পরপরই তৃতীয় শ্রেণির ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা বই তুলে নিতে স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছে এনসিটিবি।

 

এনসিটিবি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফরহাদুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, এটা ছাপাখানার ভুল। ভুলটা হলো ইসলাম শিক্ষা বইয়ের উল্টো পাশে হিন্দু ধর্ম শিক্ষা বইয়ের ইংরেজি ভার্সনের মলাট রয়ে গেছে। এটা জানার পরপরই আমরা বই তুলে নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছি। শুনেছি ৪০টি বইয়ে এমন ভুল হয়েছে। সাতক্ষীরার একটি স্কুলে এমন ভুল ছাপা বই পাওয়া গেছে। নতুন করে বই ছাপিয়ে দ্রুত শিক্ষার্থীদের বইটি দেওয়া হবে। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

তবে নাম প্রকাশ না করে এনসিটিবির বিতরণ শাখার এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানান, এখন ওয়েব মেশিনে বই ছাপা হয়। যদি ভুল হয়ে থাকে, তাহলে কয়েক হাজার বইয়ে একই রকম ভুল হওয়ার কথা। কিন্তু অল্প কিছু বইয়ে এ ধরনের ভুল হওয়ায় সন্দেহ বাড়ছে। এটা প্রেসের ভুল নাকি অন্য কোনো কিছু আছে, সেটা তদন্ত করা প্রয়োজন।

 

এদিকে, সাতক্ষীরা সদর উপজেলা এবং ঠাকুরগাঁওয়ের বেশ কয়েকটি স্কুলে তৃতীয় শ্রেণির এমন বই পেয়েছে শিক্ষার্থীরা। ঠাকুরগাঁওয়ের আমানউল্লাহ আমান নামে একজন অভিভাবক ভুলে ছাপা বইটির ছবি ও ভিডিও ফেসবুকে শেয়ার করে দ্রুত সংশোধনী দিতে অনুরোধ জানিয়েছেন।

 

আমানউল্লাহ আমান গণমাধ্যমকে বলেন, তৃতীয় শ্রেণির বইটিতে এমন ভুল দেখে খোঁজ নিলাম। দেখলাম আমাদের আশপাশের দুটি স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ইসলাম শিক্ষা বইয়ে একই ভুল। অন্য এলাকার খবর আমি জানি না।

 

সাতক্ষীরার কয়েকজন অভিভাবক বলছেন, তারা নিজেদের সন্তানের বইয়ে এটা দেখার পর অন্যদের একই কি না, তা দেখার জন্য খোঁজ-খবর নিয়েছেন। আশপাশের অনেকগুলো স্কুলে তারা একই ভুল দেখেছেন। বুধবার (৩ জানুয়ারি) শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বই নিয়ে নিয়েছেন শিক্ষকরা। দ্রুত তাদের নতুন বই দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে স্কুল থেকে।

 

এ বিষয়ে সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীম ভূঁইয়া গণমাধ্যমকে বলেন, প্রাথমিকভাবে ৫-১০টি স্কুলে ভুল বই পাওয়ার খবর জেনেছি। এর পরপরই সেগুলো তুলে এনেছি। তবে বইয়ের সংখ্যা কত তা তাৎক্ষণিকভাবে বলতে পারছি না।

 

সাতক্ষীরা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (ডিপিইও) হোসনে ইয়াসমিন করিমী গণমাধ্যমকে বলেন, সাতক্ষীরার সব উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ইসলাম শিক্ষা বই শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফেরত নেওয়া হচ্ছে। বইতে কোনো ভুল আছে কি না, সেটা যাচাই করা হবে।

 

Facebook Comments Box