আগেও অভিযান হয়েছিলো গ্রিন কোজি কটেজে
- আপডেট সময় : ০২:৩৯:৫৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ মার্চ ২০২৪ ৫৭ বার পঠিত
নকশা বহির্ভূতভাবে ভবনের আয়তন বাড়ানোর অভিযোগে বেইলি রোডের আগুনে পোড়া গ্রিন কোজি কটেজ নামের ভবনটিতে আগেও অভিযান চালিয়েছিলো রাজউক। ভ্রাম্যমাণ আদালতের সেই অভিযানে ভবন মালিককে ত্রিশ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছিলো। সেই সাথে কী কাজে ভবনটি ব্যবহার করা হবে সে সংক্রান্ত সনদ না নেয়ার কারণে রাজউকের নোটিশ পেয়েছিলো ভবনটি।
সম্প্রতি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ভবনের ব্যবস্থাপনা নিয়ে দেশজুড়ে আলোচনার মধ্যেই এ খবর সামনে এলো। জানা যায়, ২০১৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি বেইলি রোডের ২ নম্বর হোল্ডিংয়ের গ্রিন কোজি কটেজ নামের ভবনটির নিচতলার বেজমেন্টের অবৈধ অংশে উচ্ছেদ চালায় রাজউকের ভ্রাম্যমাণ আদালত। সেদিনের অভিযানে ভবনটির নকশা বহির্ভূত অংশ ভেঙে দেয়া হয়।
রাজউকের জোন ‘ছয় বাই এক’ -এর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা মো. নূরুজ্জামান হোসেন জাহির সাক্ষরিত এই নথি বলছে সেই অভিযানের পর পে-লোডারের ভাড়া ও এর জ্বালানি বাবত ভবন মালিককে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
একই বছর ভবনটি কী কাজে ব্যবহার হবে তা জানিয়ে সনদ নিতেও নোটিশ দিয়েছিলো রাজউক। ইমারত বিধিমালা অনুযায়ী, কোনো ভবন নির্মাণের পর সেটি ব্যবহারের আগে অকুপেন্সি সনদ নিতে হয়।
রাজউকের নথি বলছে, ২০১১ সালে আটতলা ভবনটি রাজউকের অনুমোদন পায়। নিচতলা থেকে পঞ্চম তলা পর্যন্ত বাণিজ্যিক ও বাকি তিন তলা পর্যন্ত আবাসিক বা রাজউকের ভাষায় মিশ্র হিসেবে অনুমোদন দেয়া হয়। ২০১৩ সালে ভবনটির কাজ শেষ হবার পর বাণিজ্যিক ব্যবহারের ট্রেড লাইসেন্স নেয়া হলেও অকুপেন্সি সনদ নেয়নি ভবন কর্তৃপক্ষ।
রাজধানীতে নকশা বহির্ভূত প্রায় চার লাখ ভবন আছে। এসব ভবনের অনেকগুলোতেই চলছে ঝুঁকিপূর্ণ রেস্টুরেন্ট মার্কেট ও দোকানপাট। এসব ভবনে দ্রুতই অভিযান চালানোর সিদ্ধান্তও নিয়েছে রাজউক।
শুক্রবার পুলিশের মামলায়, ভবনটির মালিকানা প্রতিষ্ঠান আমিন মোহাম্মদ গ্রুপসহ তিনজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এতে আসামি করা হয়েছে অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনকে।
অভিযোগে আরও বলা হয়, তারা জননিরাপত্তা তোয়াক্কা না করে অবহেলা, অসাবধানতা, বেপরোয়া ও তাচ্ছিল্যপূর্ণ এবং বিপজ্জনকভাবে এই গ্যাস সিলিন্ডার এবং গ্যাসের চুলা ব্যবহার করে আসছিলেন। এই গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে অগ্নিকাণ্ডের সৃষ্টি হয়। এই আগুনের তাপ ও প্রচণ্ড ধোঁয়া পুরো ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। যার ফলে বিভিন্ন ফ্লোরে থাকা রেস্টুরেন্ট ও দোকানে অবস্থানকারী লোকজন আগুনে পুড়ে ও ধোঁয়া শ্বাসনালিতে ঢুকে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা যান এবং গুরুতর আহত হন।
পুলিশ মামলার এজাহারে আরও উল্লেখ করে, ভবনটি আবাসিক ভবন হিসেবে নির্মিত হলেও পরবর্তীতে মালিক ভবনের বিভিন্ন ফ্লোর ব্যবসায়িক কাজে পরিচালনার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমোদন নেয়। ভবনটির যেসব তলায় রেস্তোরাঁ ছিলো, সেগুলোতে গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারের জন্য ফায়ার সার্ভিসের কোনো অনুমোদন নেয়নি। এ ছাড়া অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল না। এমনকি ভবনটিতে ফায়ার এক্সিট সিঁড়িও নেই।