ঢাকা ০২:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আওয়ামী লীগ নেতা বেশির ভাগই ভারতে, কেউ বা দূর দেশে’

সারাবেলা প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৯:৩৯:৫১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৯ অক্টোবর ২০২৪ ৩ বার পঠিত

ফাইল ছবি

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক পালাবদলে এখন বিপাকে আওয়ামী লীগ। সরকার পতনের সঙ্গে সঙ্গে দলটির শীর্ষ নেতারা আত্মগোপনে চলে গেছেন।

তাঁদের বেশির ভাগ আশ্রয় নিয়েছেন প্রতিবেশী দেশ ভারতে। গত পাঁচই অগাস্ট আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত যাওয়ার মধ্য দিয়ে এই যাত্রার শুরু।

বাংলাদেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিজেদের অনুকূলে না থাকলে আওয়ামী লীগের অনেক নেতা ভারতে আশ্রয় নেন। ভারতও নানা কৌশলে প্রকাশ্যে বা গোপনে তাঁদের আশ্রয় দিয়ে আসছে।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর দেশে রাজনীতির মাঠে আওয়ামী লীগ যখন বেশ বেকায়দায়, তখন দলটির অনেক নেতা ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। শেখ হাসিনা ওই সময় প্রায় ছয় বছর ভারতের আশ্রয়ে ছিলেন।

এবারও ব্যতিক্রম ঘটেনি। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতারা ভারতে আশ্রয় নিতে শুরু করেন।

এরই মধ্যে বিভিন্ন পর্যায়ে কয়েক’শ নেতা ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে। তবে বেশিরভাগের অবস্থান পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কলকাতার নিউটাউন, মারকুইজ স্ট্রিট ও সল্টলেক এলাকায়।

সংবাদটিতে বলা হয়েছে, দেশের গুরুত্বপূর্ণ বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও টেলিকম খাতে একক আধিপত্য সামিট গ্রুপের।

মূলত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই এসব খাতে ব্যবসা শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। প্রতিযোগিতা ছাড়া বিভিন্ন প্রকল্প আর সরকারি নানা সুবিধা পেয়ে গত দেড় দশকে সামিট গ্রুপের ব্যবসা ফুলেফেঁপে উঠেছে।

দেশের গণ্ডি পেরিয়ে সিঙ্গাপুরের শীর্ষ ৫০ তালিকায় স্থান করে নিয়েছেন সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আজিজ খান। এক যুগের বেশি সময় সিঙ্গাপুরের স্থায়ী বাসিন্দা তিনি।

সামিট পাওয়ার ইন্টারন্যাশনাল সিঙ্গাপুরে নিবন্ধিত। সেজন্য বাংলাদেশে ব্যবসা করলেও এ কোম্পানির সম্পদের হিসাব করা হয় সিঙ্গাপুরে।

তবে তারা বরাবরই বলে আসছে যে তারা কোন সরকারি সুবিধা নেয় নি। যোগ্যতা দিয়েই তারা ব্যবসা করছে।

ছাত্র -জনতার অভ্যুত্থানে হতাহতের ঘটনার মামলায় আসামি গ্রেপ্তারে এখন ব্যস্ত সময় পার করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গেল সাত দিনে সাত হাজারের বেশি ব্যক্তিকে ধরেছে তারা।

সাঁড়াশি অভিযানে গ্রেপ্তারের মধ্যে বিগত সরকারের মন্ত্রী, সংসদ সদস্য (এমপি), আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক সরকারি কর্মকর্তার সংখ্যাই বেশি।

এ সুযোগে সাম্প্রতিক সময়ে খুন, ছিনতাই, ডাকাতি করে পার পেয়ে যাচ্ছে অনেক অপরাধী।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ভেঙে পড়া আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখনও পুরোপুরি স্বাভাবিক হয় নি। নানা সংকটে টহলসহ সার্বিক কার্যক্রম চালাতে পারছে না পুলিশ।

থানার কাজও স্থবির। তাতে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে অপরাধীরা। বিশেষ করে প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে ছিনতাই।

শুধু টাকা-ফোনসহ মূল্যবান সামগ্রী ছিনিয়ে নিয়েই ক্ষান্ত হচ্ছে না, তারা গুলি বা ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত করা হচ্ছে ভুক্তভোগীকে।

কখনও যাচ্ছে প্রাণ তবে ভুক্তভোগীর বেশিরভাগই এ নিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ করছেন না। ফলে পুলিশের হাতে ছিনতাইয়ের প্রকৃত পরিসংখ্যান নেই।

বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা মেধার ভিত্তিতে সরকারি চাকরির দাবি তুলে আন্দোলনে নেমেছিলেন। সেই আন্দোলনের জেরে সরকারের পতন হয়েছে। শিক্ষার্থীদের সমর্থনেই নতুন সরকার গঠন হয়েছে। কিন্তু তাদের কাঙ্ক্ষিত চাকরির বিষয়ে স্থবিরতা কাটেনি এখনো।

সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অন্তত পাঁচ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে এই মুহূর্তে। এই পদ পূরণ হলে চাকরি প্রত্যাশীদের বড় অংশের কর্মসংস্থান হতে পারে।

এই পদ পূরণে নিয়োগ সংক্রান্ত একটি কমিশন করে দ্রুত নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ বেসামরিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সরকারি চাকরিতে পাঁচ লাখ তিন হাজার ৩৩৩টি পদ খালি। বিপুল এই শূন্যপদ থাকলেও অনুষ্ঠিত হচ্ছে না চাকরি পরীক্ষা। আবার আগে অনুষ্ঠিত হওয়া চাকরি পরীক্ষাও সম্পন্ন হচ্ছে না।

কোভিডকালে দেশজুড়ে মাসের পর মাস ছিল লকডাউন। মারাত্মক প্রভাব পড়ে জীবনযাপনে। সে ধাক্কায় দারিদ্র্যের হার ২১ দশমিক ৬০ শতাংশ থেকে বেড়ে ৪২ শতাংশে দাঁড়ায় বলে সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) এক জরিপে উঠে আসে।

ওই সময় অনেকটাই নীরব ভূমিকা পালন করায় প্রশ্ন উঠেছিল নন-গভর্নমেন্টাল অর্গানাইজেশন (এনজিও) বা বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলোর কার্যক্রম নিয়ে।

কেননা যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশে ত্রাণ ও পুনর্বাসনের মধ্য দিয়েই অলাভজনক এসব প্রতিষ্ঠানের যাত্রা। পরবর্তী সময়ে বেড়েছে এর ক্ষেত্র ও সংখ্যা।

তবে কার্যপরিধি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক উন্নয়নের মূল জায়গা থেকেও এনজিওগুলো ক্রমেই সরে যাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

তারা বলছেন, প্রান্তিক মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নের মতো উদ্যোগ থেকে সরে এসে দেশের বৃহদাকারের এনজিওগুলো এখন করপোরেট কালচারের দিকে যাচ্ছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের দাবির মুখে সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান মোঃ সোহরাব হোসাইন পদত্যাগ করেছেন।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে তিনি পিএসসির সচিবের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন। এছাড়া চেয়ারম্যানের পাশাপাশি কমিশনের ১২ জন সদস্যও পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। পদত্যাগপত্রগুলো রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হয়েছে।

পদত্যাগ করা সদস্যরা হলেন- সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব ফয়েজ আহম্মদ, সাবেক অধ্যাপক উত্তম কুমার সাহা, সাবেক নির্বাহী পরিচালক জাহিদুর রশিদ, অধ্যাপক মুবিনা খন্দকার, অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন, সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব কে এম আলী আজম, সাবেক সচিব খলিলুর রহমান, মাউশির সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক, সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব মাকছুদুর রহমান, সাবেক সচিব নাজমানারা খাতুন ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক প্রদীপ কুমার পাণ্ডে।

অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র সচিব সোহরাব হোসাইনকে ২০২০ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর পিএসসির চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল।

চাল, শাক-সবজি, ডিম ও ব্রয়লার মুরগিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিম্ন আয়ের মানুষকে আরো বিপাকে ফেলেছে, তাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে।

বাজার বিশ্লেষকরা নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করে তারা বলছেন, ভোক্তাদের রক্ষা করতে সময়মত পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে সরকার।

তারা বলছেন আগের সরকারের মতোই অন্তর্বর্তী সরকার ও ব্যবসায়িক সিন্ডিকেটগুলিকে পরিস্থিতির সুবিধা নিতে দিচ্ছে ফলে ভোক্তাদের উপর আরও চাপ বাড়ছে।

সরকার এই দুই মাসে প্রায় এক ডজন সিদ্ধান্ত নেয়ার পরও পিছিয়েছে, সমাধান নিয়ে সন্দিহান হয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এটিকে অসঙ্গতি, অভিজ্ঞতা এবং দৃঢ়তার অভাব বলে ব্যাখ্যা করছেন। নানাবিধ দাবির মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে সরকারকে।

কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের উচ্চপদস্থ সূত্র এই পিছিয়ে যাওয়ার মূল কারণ হিসেবে ব্যাখ্যা করছেন সামাজিক মাধ্যমে মানুষের আক্রোশ এবং পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে জনগণের চাপ।

ঢাকা দক্ষিণ সিটির সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস করপোরেশনের স্থায়ী আমানতের বড় অংশ নিজের ব্যাংক মধুমতিতে রেখেছেন।

সিটি করপোরেশনের আর্থিক লেনদেনও অন্য ব্যাংক থেকে সরিয়ে মধুমতিতে নিয়েছেন।

২০২০ সালে তাপস মেয়র হন। এরপর তিনি সিটি করপোরেশনের নিজস্ব আয় বাড়ানোর দিকে নজর দেন।

আয় বাড়লেও উন্নয়নমূলক কাজে তার জোর ছিল না। বরং সিটি করপোরেশনের টাকা নিজের ব্যাংকে রাখতে মনোযোগী ছিলেন তিনি।

Facebook Comments Box
ট্যাগস :

আওয়ামী লীগ নেতা বেশির ভাগই ভারতে, কেউ বা দূর দেশে’

আপডেট সময় : ০৯:৩৯:৫১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৯ অক্টোবর ২০২৪

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক পালাবদলে এখন বিপাকে আওয়ামী লীগ। সরকার পতনের সঙ্গে সঙ্গে দলটির শীর্ষ নেতারা আত্মগোপনে চলে গেছেন।

তাঁদের বেশির ভাগ আশ্রয় নিয়েছেন প্রতিবেশী দেশ ভারতে। গত পাঁচই অগাস্ট আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত যাওয়ার মধ্য দিয়ে এই যাত্রার শুরু।

বাংলাদেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিজেদের অনুকূলে না থাকলে আওয়ামী লীগের অনেক নেতা ভারতে আশ্রয় নেন। ভারতও নানা কৌশলে প্রকাশ্যে বা গোপনে তাঁদের আশ্রয় দিয়ে আসছে।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর দেশে রাজনীতির মাঠে আওয়ামী লীগ যখন বেশ বেকায়দায়, তখন দলটির অনেক নেতা ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। শেখ হাসিনা ওই সময় প্রায় ছয় বছর ভারতের আশ্রয়ে ছিলেন।

এবারও ব্যতিক্রম ঘটেনি। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতারা ভারতে আশ্রয় নিতে শুরু করেন।

এরই মধ্যে বিভিন্ন পর্যায়ে কয়েক’শ নেতা ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে। তবে বেশিরভাগের অবস্থান পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কলকাতার নিউটাউন, মারকুইজ স্ট্রিট ও সল্টলেক এলাকায়।

সংবাদটিতে বলা হয়েছে, দেশের গুরুত্বপূর্ণ বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও টেলিকম খাতে একক আধিপত্য সামিট গ্রুপের।

মূলত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই এসব খাতে ব্যবসা শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। প্রতিযোগিতা ছাড়া বিভিন্ন প্রকল্প আর সরকারি নানা সুবিধা পেয়ে গত দেড় দশকে সামিট গ্রুপের ব্যবসা ফুলেফেঁপে উঠেছে।

দেশের গণ্ডি পেরিয়ে সিঙ্গাপুরের শীর্ষ ৫০ তালিকায় স্থান করে নিয়েছেন সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আজিজ খান। এক যুগের বেশি সময় সিঙ্গাপুরের স্থায়ী বাসিন্দা তিনি।

সামিট পাওয়ার ইন্টারন্যাশনাল সিঙ্গাপুরে নিবন্ধিত। সেজন্য বাংলাদেশে ব্যবসা করলেও এ কোম্পানির সম্পদের হিসাব করা হয় সিঙ্গাপুরে।

তবে তারা বরাবরই বলে আসছে যে তারা কোন সরকারি সুবিধা নেয় নি। যোগ্যতা দিয়েই তারা ব্যবসা করছে।

ছাত্র -জনতার অভ্যুত্থানে হতাহতের ঘটনার মামলায় আসামি গ্রেপ্তারে এখন ব্যস্ত সময় পার করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গেল সাত দিনে সাত হাজারের বেশি ব্যক্তিকে ধরেছে তারা।

সাঁড়াশি অভিযানে গ্রেপ্তারের মধ্যে বিগত সরকারের মন্ত্রী, সংসদ সদস্য (এমপি), আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক সরকারি কর্মকর্তার সংখ্যাই বেশি।

এ সুযোগে সাম্প্রতিক সময়ে খুন, ছিনতাই, ডাকাতি করে পার পেয়ে যাচ্ছে অনেক অপরাধী।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ভেঙে পড়া আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখনও পুরোপুরি স্বাভাবিক হয় নি। নানা সংকটে টহলসহ সার্বিক কার্যক্রম চালাতে পারছে না পুলিশ।

থানার কাজও স্থবির। তাতে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে অপরাধীরা। বিশেষ করে প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে ছিনতাই।

শুধু টাকা-ফোনসহ মূল্যবান সামগ্রী ছিনিয়ে নিয়েই ক্ষান্ত হচ্ছে না, তারা গুলি বা ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত করা হচ্ছে ভুক্তভোগীকে।

কখনও যাচ্ছে প্রাণ তবে ভুক্তভোগীর বেশিরভাগই এ নিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ করছেন না। ফলে পুলিশের হাতে ছিনতাইয়ের প্রকৃত পরিসংখ্যান নেই।

বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা মেধার ভিত্তিতে সরকারি চাকরির দাবি তুলে আন্দোলনে নেমেছিলেন। সেই আন্দোলনের জেরে সরকারের পতন হয়েছে। শিক্ষার্থীদের সমর্থনেই নতুন সরকার গঠন হয়েছে। কিন্তু তাদের কাঙ্ক্ষিত চাকরির বিষয়ে স্থবিরতা কাটেনি এখনো।

সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অন্তত পাঁচ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে এই মুহূর্তে। এই পদ পূরণ হলে চাকরি প্রত্যাশীদের বড় অংশের কর্মসংস্থান হতে পারে।

এই পদ পূরণে নিয়োগ সংক্রান্ত একটি কমিশন করে দ্রুত নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ বেসামরিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সরকারি চাকরিতে পাঁচ লাখ তিন হাজার ৩৩৩টি পদ খালি। বিপুল এই শূন্যপদ থাকলেও অনুষ্ঠিত হচ্ছে না চাকরি পরীক্ষা। আবার আগে অনুষ্ঠিত হওয়া চাকরি পরীক্ষাও সম্পন্ন হচ্ছে না।

কোভিডকালে দেশজুড়ে মাসের পর মাস ছিল লকডাউন। মারাত্মক প্রভাব পড়ে জীবনযাপনে। সে ধাক্কায় দারিদ্র্যের হার ২১ দশমিক ৬০ শতাংশ থেকে বেড়ে ৪২ শতাংশে দাঁড়ায় বলে সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) এক জরিপে উঠে আসে।

ওই সময় অনেকটাই নীরব ভূমিকা পালন করায় প্রশ্ন উঠেছিল নন-গভর্নমেন্টাল অর্গানাইজেশন (এনজিও) বা বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলোর কার্যক্রম নিয়ে।

কেননা যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশে ত্রাণ ও পুনর্বাসনের মধ্য দিয়েই অলাভজনক এসব প্রতিষ্ঠানের যাত্রা। পরবর্তী সময়ে বেড়েছে এর ক্ষেত্র ও সংখ্যা।

তবে কার্যপরিধি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক উন্নয়নের মূল জায়গা থেকেও এনজিওগুলো ক্রমেই সরে যাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

তারা বলছেন, প্রান্তিক মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নের মতো উদ্যোগ থেকে সরে এসে দেশের বৃহদাকারের এনজিওগুলো এখন করপোরেট কালচারের দিকে যাচ্ছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের দাবির মুখে সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান মোঃ সোহরাব হোসাইন পদত্যাগ করেছেন।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে তিনি পিএসসির সচিবের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন। এছাড়া চেয়ারম্যানের পাশাপাশি কমিশনের ১২ জন সদস্যও পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। পদত্যাগপত্রগুলো রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হয়েছে।

পদত্যাগ করা সদস্যরা হলেন- সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব ফয়েজ আহম্মদ, সাবেক অধ্যাপক উত্তম কুমার সাহা, সাবেক নির্বাহী পরিচালক জাহিদুর রশিদ, অধ্যাপক মুবিনা খন্দকার, অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন, সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব কে এম আলী আজম, সাবেক সচিব খলিলুর রহমান, মাউশির সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক, সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব মাকছুদুর রহমান, সাবেক সচিব নাজমানারা খাতুন ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক প্রদীপ কুমার পাণ্ডে।

অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র সচিব সোহরাব হোসাইনকে ২০২০ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর পিএসসির চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল।

চাল, শাক-সবজি, ডিম ও ব্রয়লার মুরগিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিম্ন আয়ের মানুষকে আরো বিপাকে ফেলেছে, তাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে।

বাজার বিশ্লেষকরা নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করে তারা বলছেন, ভোক্তাদের রক্ষা করতে সময়মত পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে সরকার।

তারা বলছেন আগের সরকারের মতোই অন্তর্বর্তী সরকার ও ব্যবসায়িক সিন্ডিকেটগুলিকে পরিস্থিতির সুবিধা নিতে দিচ্ছে ফলে ভোক্তাদের উপর আরও চাপ বাড়ছে।

সরকার এই দুই মাসে প্রায় এক ডজন সিদ্ধান্ত নেয়ার পরও পিছিয়েছে, সমাধান নিয়ে সন্দিহান হয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এটিকে অসঙ্গতি, অভিজ্ঞতা এবং দৃঢ়তার অভাব বলে ব্যাখ্যা করছেন। নানাবিধ দাবির মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে সরকারকে।

কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের উচ্চপদস্থ সূত্র এই পিছিয়ে যাওয়ার মূল কারণ হিসেবে ব্যাখ্যা করছেন সামাজিক মাধ্যমে মানুষের আক্রোশ এবং পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে জনগণের চাপ।

ঢাকা দক্ষিণ সিটির সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস করপোরেশনের স্থায়ী আমানতের বড় অংশ নিজের ব্যাংক মধুমতিতে রেখেছেন।

সিটি করপোরেশনের আর্থিক লেনদেনও অন্য ব্যাংক থেকে সরিয়ে মধুমতিতে নিয়েছেন।

২০২০ সালে তাপস মেয়র হন। এরপর তিনি সিটি করপোরেশনের নিজস্ব আয় বাড়ানোর দিকে নজর দেন।

আয় বাড়লেও উন্নয়নমূলক কাজে তার জোর ছিল না। বরং সিটি করপোরেশনের টাকা নিজের ব্যাংকে রাখতে মনোযোগী ছিলেন তিনি।

Facebook Comments Box