ঢাকা ০৯:৫৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ৪ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

অভিযানেও কমছে না পেঁয়াজের দাম; অসাধু ব্যবসায়ীদের কৃত্রিম সংকটে ভোগান্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৭:৪৪:২২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৯ বার পঠিত
ঘরে বাইরে কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আবারো আলোচনায় বাংলাদেশের পেঁয়াজের উর্ধ্বমূল্য। প্রশাসনের অভিযানেও নিয়ন্ত্রণে আসছে না পেঁয়াজের বাড়তি বাজার দর। ভারত থেকে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের ঘোষণার পর পেঁয়াজের দাম শনিবার একদিনের ব্যবধানে দ্বিগুণের বেশি বেড়ে যায়। হঠাৎই গুদাম থেকে উধাও হয়ে যায় পেঁয়াজ।
দাম নিয়ন্ত্রণে প্রশাসন অভিযান চালিয়ে ব্যবসায়ীদের জরিমানা করলেও মিলছে না সুফল। রাজধানী ঢাকায় গেল শুক্রবার ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া পেঁয়াজ রবিবার ২২০ থেকে ২৪০ টাকায় উঠেছিল। অনেক জায়গায় পেঁয়াজ বিক্রি বন্ধও রয়েছে।

এদিকে ভারত থেকে আমদানির জন্য ঋণপত্র (এলসি) খোলা ৫২ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ দ্রুত দেশে আনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ জন্য ভারতে বাংলাদেশ দূতবাসকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় চিঠি পাঠিয়েছে বলে জানা গেছে। পাশাপাশি দেশি মুড়িকাটা পেঁয়াজের চালান বাজারে আসতে শুরু করেছে। নতুন পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়লে সব ধরনের পেঁয়াজের দাম কমে আসবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। তারপরও দেশে যৌক্তিক মূল্যে পেঁয়াজ বিক্রয় নিশ্চিত করতে কঠোর মনিটরিং করার জন্য সব জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

অন্যদিকে পেঁয়াজের মূল্য স্থিতিশীল ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে ঢাকা মহানগরসহ দেশের সব বিভাগ ও জেলা পর্যায়ে অভিযান পরিচালনা করছে ভোক্তা অধিদপ্তর। বাড়তি দামে বিক্রি করার অভিযোগে দুই দিনে ১৩৪ পেঁয়াজ ব্যবসায়ীকে ১০ লাখ ৩৬ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করেছে সংস্থাটি। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আব্দুল জব্বার মন্ডল বিষয়টি জানিয়েছেন গণমাধ্যমকে। যদিও প্রশাসনের অভিযান বা ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে খুচরা ব্যবসায়ীদের জেল-জরিমানাকে সমর্থন করছে না ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো।

ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের খবরে বাংলাদেশে দাম বেড়ে যাওয়ার মত ঘটনা গত কয়েক বছরে একাধিকবার ঘটেছে। কিন্তু এর সমাধান কেন বের করা যাচ্ছে না, প্রশ্নের জবাবে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান মনে করেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ীদের সাজানো কৃত্রিম সংকট এই পরিস্থিতি তৈরি করে।

কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, মুড়িকাটা ও গ্রীষ্মকালীন নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসতে শুরু করেছে। প্রতি বছর মুড়িকাটা পেঁয়াজ আবাদ হয় প্রায় ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে এবং উৎপাদিত হয় প্রায় ৮ লাখ টন। এছাড়া এ বছর গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ আবাদ হয়েছে প্রায় ৫০০ হেক্টর জমিতে। সব মিলিয়ে উৎপাদিত হবে প্রায় ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ। এই মুড়িকাটা ও গ্রীষ্মকালীন নতুন পেঁয়াজ বাজারে থাকবে তিন থেকে সাড়ে তিন মাস। এরপর মূল পেঁয়াজ আসা শুরু হবে। তা উৎপাদিত হতে পারে ২৬-২৮ লাখ টন।
Facebook Comments Box
ট্যাগস :

অভিযানেও কমছে না পেঁয়াজের দাম; অসাধু ব্যবসায়ীদের কৃত্রিম সংকটে ভোগান্তি

আপডেট সময় : ০৭:৪৪:২২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৩
ঘরে বাইরে কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আবারো আলোচনায় বাংলাদেশের পেঁয়াজের উর্ধ্বমূল্য। প্রশাসনের অভিযানেও নিয়ন্ত্রণে আসছে না পেঁয়াজের বাড়তি বাজার দর। ভারত থেকে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের ঘোষণার পর পেঁয়াজের দাম শনিবার একদিনের ব্যবধানে দ্বিগুণের বেশি বেড়ে যায়। হঠাৎই গুদাম থেকে উধাও হয়ে যায় পেঁয়াজ।
দাম নিয়ন্ত্রণে প্রশাসন অভিযান চালিয়ে ব্যবসায়ীদের জরিমানা করলেও মিলছে না সুফল। রাজধানী ঢাকায় গেল শুক্রবার ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া পেঁয়াজ রবিবার ২২০ থেকে ২৪০ টাকায় উঠেছিল। অনেক জায়গায় পেঁয়াজ বিক্রি বন্ধও রয়েছে।

এদিকে ভারত থেকে আমদানির জন্য ঋণপত্র (এলসি) খোলা ৫২ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ দ্রুত দেশে আনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ জন্য ভারতে বাংলাদেশ দূতবাসকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় চিঠি পাঠিয়েছে বলে জানা গেছে। পাশাপাশি দেশি মুড়িকাটা পেঁয়াজের চালান বাজারে আসতে শুরু করেছে। নতুন পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়লে সব ধরনের পেঁয়াজের দাম কমে আসবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। তারপরও দেশে যৌক্তিক মূল্যে পেঁয়াজ বিক্রয় নিশ্চিত করতে কঠোর মনিটরিং করার জন্য সব জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

অন্যদিকে পেঁয়াজের মূল্য স্থিতিশীল ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে ঢাকা মহানগরসহ দেশের সব বিভাগ ও জেলা পর্যায়ে অভিযান পরিচালনা করছে ভোক্তা অধিদপ্তর। বাড়তি দামে বিক্রি করার অভিযোগে দুই দিনে ১৩৪ পেঁয়াজ ব্যবসায়ীকে ১০ লাখ ৩৬ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করেছে সংস্থাটি। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আব্দুল জব্বার মন্ডল বিষয়টি জানিয়েছেন গণমাধ্যমকে। যদিও প্রশাসনের অভিযান বা ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে খুচরা ব্যবসায়ীদের জেল-জরিমানাকে সমর্থন করছে না ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো।

ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের খবরে বাংলাদেশে দাম বেড়ে যাওয়ার মত ঘটনা গত কয়েক বছরে একাধিকবার ঘটেছে। কিন্তু এর সমাধান কেন বের করা যাচ্ছে না, প্রশ্নের জবাবে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান মনে করেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ীদের সাজানো কৃত্রিম সংকট এই পরিস্থিতি তৈরি করে।

কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, মুড়িকাটা ও গ্রীষ্মকালীন নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসতে শুরু করেছে। প্রতি বছর মুড়িকাটা পেঁয়াজ আবাদ হয় প্রায় ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে এবং উৎপাদিত হয় প্রায় ৮ লাখ টন। এছাড়া এ বছর গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ আবাদ হয়েছে প্রায় ৫০০ হেক্টর জমিতে। সব মিলিয়ে উৎপাদিত হবে প্রায় ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ। এই মুড়িকাটা ও গ্রীষ্মকালীন নতুন পেঁয়াজ বাজারে থাকবে তিন থেকে সাড়ে তিন মাস। এরপর মূল পেঁয়াজ আসা শুরু হবে। তা উৎপাদিত হতে পারে ২৬-২৮ লাখ টন।
Facebook Comments Box