ঢাকা ১২:৪৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ৪ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo আওয়ামী দোসরদের গুরুত্বপূর্ণ পদে রেখে সরকার সফল হবে না: তারেক Logo স্বৈরাচারের হিংস্র থাবা থেকে দেশ এখনও মুক্ত নয়: রিজভী Logo হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে যেভাবে ইসরায়েল খুঁজে বের করে হত্যা করেছে Logo সোনারগাঁওয়ে বিদ্যুতায়িত হয়ে যুবকের মৃত্যু Logo সংবাদ প্রকাশের পর বৃদ্ধা মহিলার ঠাই হলো স্বামীর বসত ভিটায় Logo সোনারগাঁয়ে প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সরকারি হালট দখল করে বালু ভরাট Logo ‘সংস্কারের ধীর গতি’ ও কাজের গুরুত্ব নির্ধারণ নিয়ে সমালোচনা, কী বলছেন উপদেষ্টারা? Logo আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গণহত্যার বিচার কার্যক্রম শুরু আজ Logo বাড়তে পারে ঈদ ও পূজার সরকারি ছুটি Logo আগামী বছর থেকে আবারও মাধ্যমিকে বিভাগ বিভাজন শুরু

অন্তত ৫০ ভাগ ভোটারের উপস্থিতি চায় আওয়ামী লীগ

সারাবেলা প্রতিবেদন
  • আপডেট সময় : ০১:২৫:৪৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ জানুয়ারী ২০২৪ ১৯ বার পঠিত

নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতার মাপকাঠি শুধু ভোটার উপস্থিতি কিনা সে বিষয়ে ভিন্নমত আছে অনেকের

দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন দোরগোড়ায়৷ বিএনপিবিহীন এই নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা কতটা এ প্রশ্নের জবাব সরকারি দল আওয়ামী লীগ খুঁজছে ভোটারের উপস্থিতিতে৷

প্রতিদিনের মতো আজও সকাল আটটায় দোকান খোলেন আমিনুল ইসলাম৷ মতিঝিল শাপলা চত্বরের ব্যস্ত সড়কের রিকশা-গাড়িগুলো তার দিকে ধুলো ছিটিয়ে চলে গেলেও এই ফুটপাতই তার প্রিয়৷ একটা মোটা চাদরই তার দোকানঘর৷ সেটির ওপর লুঙ্গি আর গামছার বেশ রঙিন পসরা সাজিয়ে বসেছেন তিনি৷

‘‘শুভ নববর্ষ৷ কেমন আছেন?’’ প্রশ্ন করতেই মাথা তুলে তাকালেন৷ কেউ বোধ হয় এমন প্রশ্ন করেন না৷

আবার প্রশ্ন করলাম, ‘‘নির্বাচনের বছর কেমন শুরু করলেন?’’

‘‘টাকাগুলোই নষ্ট,’’ এবার উত্তর দিলেন৷

আটচল্লিশ বছর বয়সd আমিনুলের কাঁচা-পাকা দাড়ি৷ একটু আগে পান চিবিয়ে ঠোঁট লাল করে রেখেছেন৷

‘‘এত এত টাকা খরচ করে এই নির্বাচন করে লাভ কী? ফলাফল তো সবারই জানা,” একটু উষ্মা তার কণ্ঠে৷

ভোট দিতে যাবেন কি না, এমন প্রশ্নের উত্তর মিললো না আমিনুলের কাছে৷ গেল কয়েকদিন এমন উৎসাহের অভাব চোখে পড়েছে অনেকের মধ্যেই৷ কেউ কেউ অবশ্য বলেছেন, তারা ভোট দিতে যাবেন৷ কিন্তু না যাওয়া বা দ্বিধায় থাকা মানুষেরও অভাব নেই৷

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি এবারের নির্বাচনে না থাকায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা আর মোটা দাগে ফলাফলের অনিশ্চয়তার অভাবে মানুষের মাঝে উৎসাহের এমন অভাব দেখা গেছে৷

বিএনপি এবারের নির্বাচন বর্জন করেছে৷ ২৮ অক্টোবরের পর তাদের নেতা-কর্মীদের ব্যাপক ধরপাকড়ের ফলে নির্বাচনে যাবার আর কোনোও সুযোগ ছিল না বলে অনেকের মত৷

তাদের নেতা-কর্মীরা বলছেন, এই নির্বাচনের আর কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই৷ তারা মানুষকে ভোটকেন্দ্রে যেতে অনুৎসাহিত করছেন৷

অন্যদিকে, বিএনপি যেহেতু নেই, ভোটের মাঠে মোটা দাগে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতাও নেই আওয়ামী লীগের৷ কিন্তু নির্বাচনকে দেশে-বিদেশে গ্রহণযোগ্যও করতে হবে৷ সে কারণে তারা এবার গ্রহণযোগ্যতার মাপকাঠি হিসেবে বেছে নিয়েছে ভোটারের উপস্থিতিকে৷ তারা মনে করছে, অন্তত ৫০ ভাগ ভোটার উপস্থিত হলেই সাধারণ মানুষ বিএনপিকে বর্জন করেছে বলে যুক্তি দিতে পারবেন দলটির নেতারা৷

প্রত্যেক কর্মীর জন্যও টার্গেট নির্ধারণ করে দেয়া হচ্ছে বলে জানালেন ঢাকা-৪ আসনের আওয়ামী লীগ নেতা আবদুর রাজ্জাক

ভোটার আনতে কৌশল

৭ জানুয়ারি ভোটারদের কেন্দ্রে আনতে আওয়ামী লীগ কয়েক স্তরের কৌশল হাতে নিয়েছে৷ তাদের এই কৌশলের প্রথম স্তর হলো আওয়ামী লীগের সব কর্মী ও তাদের পরিবারের ভোটারদের সবাইকে ভোটকেন্দ্রে আনা৷ তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের তেমনই নির্দেশনা দেয়া হয়েছে৷ এর বাইরে সাধারণ ভোটারদের তালিকা করে তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটকেন্দ্রে আসার অনুরোধ করা হচ্ছে৷ এছাড়া এলাকায় বয়োজ্যেষ্ঠদের নিয়ে করা হচ্ছে উঠান বৈঠক৷ সেসব উঠান বৈঠকে প্রার্থীরাও কখনো কখনো আসছেন৷ তৃণমূল পর্যায়ে কর্মীদের এমনকি লক্ষ্যও নির্ধারণ করে দেয়া হচ্ছে৷

সরেজমিন রাজধানীর কয়েকটি আসনে ঘুরে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছেন৷

যেমন, রাজধানীর জুরাইন এলাকায় কথা হচ্ছিল ঢাকা-৪ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী সানজিদা খানমের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য আবদুর রাজ্জাকের সঙ্গে৷ তিনি স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ভাইস প্রেসিডেন্ট৷

‘‘আমরা আমাদের পরিবারের ভোটগুলো সুনিশ্চিত করবো৷ এটা আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার,’’ বললেন রাজ্জাক৷ ‘‘সকল জায়গায় সকল কর্মীর কাছে এরই মধ্যে আমরা নির্দেশনা পৌঁছে দিয়েছি৷’’

রাজ্জাক বলেন, দ্বিতীয় পর্যায়ে তারা পুরুষ ও নারী কর্মীদের বিভিন্ন এলাকায় পুরুষ ও নারী ভোটারদের কাছে পাঠাচ্ছেন৷

‘‘আমরা বলছি, আপনারা ভোট দিতে আসবেন৷ আপনারা যেন সুষ্ঠুভাবে সুন্দরভাবে ভোট দিতে পারেন, সরকারি দল হিসেবে আমরা তা নিশ্চিত করছি,” বলেন রাজ্জাক৷

এছাড়া প্রত্যেক কর্মীর জন্যও টার্গেট নির্ধারণ করে দেয়া হচ্ছে বলে জানালেন রাজ্জাক৷

‘‘আমরা প্রত্যেক কর্মীকে বলছি, পাঁচ জন করে ভোটকেন্দ্রে নিয়ে আসবেন৷ আমাদের ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কর্মী ৮১ জন৷ এছাড়া ইউনিট আছে ১২টি৷ সেখানে ৩৭ জন করে৷ এছাড়া আছে সহযোগী সংগঠন৷ আছে দু’টি থানা কমিটি৷’’

এভাবে অন্তত ৫০ ভাগ ভোট নিশ্চিত করতে পারবেন বলে মনে করছেন রাজ্জাক৷

কিন্তু ভোটাররা কেন্দ্রে যাবেন তাদের ইচ্ছায়৷ তাদের এভাবে ভোটকেন্দ্র উপস্থিত করাটা কতটা যৌক্তিক? এ প্রশ্নের জবাবেপ্রধানমন্ত্রীর সাবেক অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান বলেছেন, এটা কোনো সমস্যা নয়৷

‘‘অনেক দেশে ভোটারদের ভোটদানে বাধ্য করার আইন আছে৷ আমাদের দেশে সেটি নেই৷ আওয়ামী লীগ যদি ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আসতে উৎসাহিত করে, সেটিতে কোনো অন্যায় নেই৷ যদি আওয়ামী লীগ শুধু নিজেদের ভোটারদের টেনে আনতো, তাহলে সেটি নিয়ে সমালোচনা করা যেতো৷’’
এই নির্বাচনে কোনভাবে ৭০ ভাগ ভোট পড়ার সম্ভাবনা দেখছেন না সাবেক নির্বাচন কমিশনার সাখাওয়াত হোসেন

ভোটার উপস্থিতি মানেই নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক নয়’

নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতার মাপকাঠি শুধু ভোটার উপস্থিতি কিনা সে বিষয়ে ভিন্নমত আছে অনেকের৷ তার একজন ব্রিগেডিয়ার (অব.) সাখাওয়াত হোসেন৷ সাবেক এই নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে কথা হচ্ছিল ভোটার উপস্থিতির মাধ্যমে নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে৷

তিনি বললেন, ‘‘যদি বলা হয়, ভোটারদের উপস্থিতি হলেই নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে, তাহলে তা সঠিক নয়৷ তাছাড়া আপনি ভোটারদের বাধ্য করতে পারেন না৷ এটা ঐচ্ছিক বিষয় তাদের জন্য৷’’

সাখাওয়াত বলেন, যদি আওয়ামী লীগ ভোটারদের আনতে প্রচারণাও চালায় তারপরও খুব বেশি সংখ্যক মানুষ ভোটকেন্দ্রে আসবেন না, যদি না তারা নিজেরা চান৷

‘‘তারা হয়তো তাদের সমর্থকদের আনতে পারবেন৷ কিন্তু শুধু তাদের দিয়ে খুব বেশি ভোট কাস্টিং হবে বলে আমি মনে করি না৷’’

তার কাছে প্রশ্ন ছিল কত ভোটার উপস্থিত হলে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয়? জবাবে সাখাওয়াত বললেন, ‘‘এমন কোনো সংজ্ঞা নেই যে এত শতাংশ ভোট পড়লে আপনি দ্বিতীয় পর্যায়ে যাবেন৷ এখন গড়ে বাংলাদেশে ৭০ ভাগ ভোট পড়ে নির্বাচনগুলোতে, তা-ও যদি সব দল অংশ নেয়৷’’

তিনি মনে করেন, এই নির্বাচনে কোনভাবেই ৭০ ভাগ ভোট পড়ার সম্ভাবনা নেই৷

Facebook Comments Box
ট্যাগস :

অন্তত ৫০ ভাগ ভোটারের উপস্থিতি চায় আওয়ামী লীগ

আপডেট সময় : ০১:২৫:৪৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ জানুয়ারী ২০২৪
দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন দোরগোড়ায়৷ বিএনপিবিহীন এই নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা কতটা এ প্রশ্নের জবাব সরকারি দল আওয়ামী লীগ খুঁজছে ভোটারের উপস্থিতিতে৷

প্রতিদিনের মতো আজও সকাল আটটায় দোকান খোলেন আমিনুল ইসলাম৷ মতিঝিল শাপলা চত্বরের ব্যস্ত সড়কের রিকশা-গাড়িগুলো তার দিকে ধুলো ছিটিয়ে চলে গেলেও এই ফুটপাতই তার প্রিয়৷ একটা মোটা চাদরই তার দোকানঘর৷ সেটির ওপর লুঙ্গি আর গামছার বেশ রঙিন পসরা সাজিয়ে বসেছেন তিনি৷

‘‘শুভ নববর্ষ৷ কেমন আছেন?’’ প্রশ্ন করতেই মাথা তুলে তাকালেন৷ কেউ বোধ হয় এমন প্রশ্ন করেন না৷

আবার প্রশ্ন করলাম, ‘‘নির্বাচনের বছর কেমন শুরু করলেন?’’

‘‘টাকাগুলোই নষ্ট,’’ এবার উত্তর দিলেন৷

আটচল্লিশ বছর বয়সd আমিনুলের কাঁচা-পাকা দাড়ি৷ একটু আগে পান চিবিয়ে ঠোঁট লাল করে রেখেছেন৷

‘‘এত এত টাকা খরচ করে এই নির্বাচন করে লাভ কী? ফলাফল তো সবারই জানা,” একটু উষ্মা তার কণ্ঠে৷

ভোট দিতে যাবেন কি না, এমন প্রশ্নের উত্তর মিললো না আমিনুলের কাছে৷ গেল কয়েকদিন এমন উৎসাহের অভাব চোখে পড়েছে অনেকের মধ্যেই৷ কেউ কেউ অবশ্য বলেছেন, তারা ভোট দিতে যাবেন৷ কিন্তু না যাওয়া বা দ্বিধায় থাকা মানুষেরও অভাব নেই৷

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি এবারের নির্বাচনে না থাকায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা আর মোটা দাগে ফলাফলের অনিশ্চয়তার অভাবে মানুষের মাঝে উৎসাহের এমন অভাব দেখা গেছে৷

বিএনপি এবারের নির্বাচন বর্জন করেছে৷ ২৮ অক্টোবরের পর তাদের নেতা-কর্মীদের ব্যাপক ধরপাকড়ের ফলে নির্বাচনে যাবার আর কোনোও সুযোগ ছিল না বলে অনেকের মত৷

তাদের নেতা-কর্মীরা বলছেন, এই নির্বাচনের আর কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই৷ তারা মানুষকে ভোটকেন্দ্রে যেতে অনুৎসাহিত করছেন৷

অন্যদিকে, বিএনপি যেহেতু নেই, ভোটের মাঠে মোটা দাগে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতাও নেই আওয়ামী লীগের৷ কিন্তু নির্বাচনকে দেশে-বিদেশে গ্রহণযোগ্যও করতে হবে৷ সে কারণে তারা এবার গ্রহণযোগ্যতার মাপকাঠি হিসেবে বেছে নিয়েছে ভোটারের উপস্থিতিকে৷ তারা মনে করছে, অন্তত ৫০ ভাগ ভোটার উপস্থিত হলেই সাধারণ মানুষ বিএনপিকে বর্জন করেছে বলে যুক্তি দিতে পারবেন দলটির নেতারা৷

প্রত্যেক কর্মীর জন্যও টার্গেট নির্ধারণ করে দেয়া হচ্ছে বলে জানালেন ঢাকা-৪ আসনের আওয়ামী লীগ নেতা আবদুর রাজ্জাক

ভোটার আনতে কৌশল

৭ জানুয়ারি ভোটারদের কেন্দ্রে আনতে আওয়ামী লীগ কয়েক স্তরের কৌশল হাতে নিয়েছে৷ তাদের এই কৌশলের প্রথম স্তর হলো আওয়ামী লীগের সব কর্মী ও তাদের পরিবারের ভোটারদের সবাইকে ভোটকেন্দ্রে আনা৷ তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের তেমনই নির্দেশনা দেয়া হয়েছে৷ এর বাইরে সাধারণ ভোটারদের তালিকা করে তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটকেন্দ্রে আসার অনুরোধ করা হচ্ছে৷ এছাড়া এলাকায় বয়োজ্যেষ্ঠদের নিয়ে করা হচ্ছে উঠান বৈঠক৷ সেসব উঠান বৈঠকে প্রার্থীরাও কখনো কখনো আসছেন৷ তৃণমূল পর্যায়ে কর্মীদের এমনকি লক্ষ্যও নির্ধারণ করে দেয়া হচ্ছে৷

সরেজমিন রাজধানীর কয়েকটি আসনে ঘুরে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছেন৷

যেমন, রাজধানীর জুরাইন এলাকায় কথা হচ্ছিল ঢাকা-৪ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী সানজিদা খানমের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য আবদুর রাজ্জাকের সঙ্গে৷ তিনি স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ভাইস প্রেসিডেন্ট৷

‘‘আমরা আমাদের পরিবারের ভোটগুলো সুনিশ্চিত করবো৷ এটা আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার,’’ বললেন রাজ্জাক৷ ‘‘সকল জায়গায় সকল কর্মীর কাছে এরই মধ্যে আমরা নির্দেশনা পৌঁছে দিয়েছি৷’’

রাজ্জাক বলেন, দ্বিতীয় পর্যায়ে তারা পুরুষ ও নারী কর্মীদের বিভিন্ন এলাকায় পুরুষ ও নারী ভোটারদের কাছে পাঠাচ্ছেন৷

‘‘আমরা বলছি, আপনারা ভোট দিতে আসবেন৷ আপনারা যেন সুষ্ঠুভাবে সুন্দরভাবে ভোট দিতে পারেন, সরকারি দল হিসেবে আমরা তা নিশ্চিত করছি,” বলেন রাজ্জাক৷

এছাড়া প্রত্যেক কর্মীর জন্যও টার্গেট নির্ধারণ করে দেয়া হচ্ছে বলে জানালেন রাজ্জাক৷

‘‘আমরা প্রত্যেক কর্মীকে বলছি, পাঁচ জন করে ভোটকেন্দ্রে নিয়ে আসবেন৷ আমাদের ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কর্মী ৮১ জন৷ এছাড়া ইউনিট আছে ১২টি৷ সেখানে ৩৭ জন করে৷ এছাড়া আছে সহযোগী সংগঠন৷ আছে দু’টি থানা কমিটি৷’’

এভাবে অন্তত ৫০ ভাগ ভোট নিশ্চিত করতে পারবেন বলে মনে করছেন রাজ্জাক৷

কিন্তু ভোটাররা কেন্দ্রে যাবেন তাদের ইচ্ছায়৷ তাদের এভাবে ভোটকেন্দ্র উপস্থিত করাটা কতটা যৌক্তিক? এ প্রশ্নের জবাবেপ্রধানমন্ত্রীর সাবেক অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান বলেছেন, এটা কোনো সমস্যা নয়৷

‘‘অনেক দেশে ভোটারদের ভোটদানে বাধ্য করার আইন আছে৷ আমাদের দেশে সেটি নেই৷ আওয়ামী লীগ যদি ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আসতে উৎসাহিত করে, সেটিতে কোনো অন্যায় নেই৷ যদি আওয়ামী লীগ শুধু নিজেদের ভোটারদের টেনে আনতো, তাহলে সেটি নিয়ে সমালোচনা করা যেতো৷’’
এই নির্বাচনে কোনভাবে ৭০ ভাগ ভোট পড়ার সম্ভাবনা দেখছেন না সাবেক নির্বাচন কমিশনার সাখাওয়াত হোসেন

ভোটার উপস্থিতি মানেই নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক নয়’

নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতার মাপকাঠি শুধু ভোটার উপস্থিতি কিনা সে বিষয়ে ভিন্নমত আছে অনেকের৷ তার একজন ব্রিগেডিয়ার (অব.) সাখাওয়াত হোসেন৷ সাবেক এই নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে কথা হচ্ছিল ভোটার উপস্থিতির মাধ্যমে নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে৷

তিনি বললেন, ‘‘যদি বলা হয়, ভোটারদের উপস্থিতি হলেই নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে, তাহলে তা সঠিক নয়৷ তাছাড়া আপনি ভোটারদের বাধ্য করতে পারেন না৷ এটা ঐচ্ছিক বিষয় তাদের জন্য৷’’

সাখাওয়াত বলেন, যদি আওয়ামী লীগ ভোটারদের আনতে প্রচারণাও চালায় তারপরও খুব বেশি সংখ্যক মানুষ ভোটকেন্দ্রে আসবেন না, যদি না তারা নিজেরা চান৷

‘‘তারা হয়তো তাদের সমর্থকদের আনতে পারবেন৷ কিন্তু শুধু তাদের দিয়ে খুব বেশি ভোট কাস্টিং হবে বলে আমি মনে করি না৷’’

তার কাছে প্রশ্ন ছিল কত ভোটার উপস্থিত হলে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয়? জবাবে সাখাওয়াত বললেন, ‘‘এমন কোনো সংজ্ঞা নেই যে এত শতাংশ ভোট পড়লে আপনি দ্বিতীয় পর্যায়ে যাবেন৷ এখন গড়ে বাংলাদেশে ৭০ ভাগ ভোট পড়ে নির্বাচনগুলোতে, তা-ও যদি সব দল অংশ নেয়৷’’

তিনি মনে করেন, এই নির্বাচনে কোনভাবেই ৭০ ভাগ ভোট পড়ার সম্ভাবনা নেই৷

Facebook Comments Box